ভারতের একটি সরকারি দফতরের ক্যালেন্ডারে গান্ধীর ছবি সরিয়ে নরেন্দ্র মোদির ছবি বসানো হয়েছে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাষ্ট্রিজ কমিশন নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত তাদেরকে দুঃখ দিয়েছে। খবর বিবিসির।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান নেতা গান্ধী তার অহিংস আন্দোলনের পাশাপাশি ভারতের গ্রামীন শিল্প পুনরুজ্জীবনের জন্যও আন্দোলন করেছিলেন।
খাদি নামের প্রতিষ্ঠানটি মূলত সেই লক্ষ্যেই কাজ করে। খাদি মানে হচ্ছে হস্তচালিত তাঁতে তৈরি এক ধরণের কাপড়। গান্ধী এই কাপড় ব্যবহার করতেন ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক হিসেবে এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।
এ পর্যন্ত খাদির ক্যালেন্ডার এবং অন্যান্য স্টেশনারী সামগ্রীতে গান্ধীর ছবিই ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এবার ক্যালেন্ডারে গান্ধীর ছবি ব্যবহার না করে সেখানে নরেন্দ্র মোদির ছবি বসানোর পর এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তবে খাদির কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এবার ক্যালেন্ডারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি যুক্ত করেছেন কারণ তিনিও গ্রামীন শিল্পের একজন সমর্থক।
তবে খাদির কর্মীরা এই যুক্তি মানতে নারাজ। বৃহস্পতিবার মুম্বাইতে তারা খাদির সদর দফতরে এর বিরুদ্ধে এক মৌন প্রতিবাদে অংশ নেন।
তারা বলেন, ‘আমরা ক্যালেন্ডারে মোদির ছবির বিরোধী নই। কিন্তু গান্ধীর ছবি যে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা শুধু জানতে চাই, কেন এখানে গান্ধীকে জায়গা দেয়া হলো না? খাদি শিল্পে কি তাহলে গান্ধী আর প্রাসঙ্গিক নন?’
খাদি অ্যান্ড ভিলেজ ইন্ডাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন অবশ্য তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। তাদের ক্যালেন্ডারে নরেন্দ্র মোদির যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে মোদিকে গান্ধীর মতো করে বসে চরকায় কাপড় বুনতে দেখা যাচ্ছে।
খাদির চেয়ারম্যান ভিনাই কুমার সাক্সেনা ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে জানিয়েছেন, পুরো খাদি শিল্পই গান্ধীর দর্শনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। কাজেই তাকে বাদ দেওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না।
তিনি বলেছেন, তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এখন খাদির সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড আ্যাম্বাসাডর বলে মনে করেন। সেজন্যই ক্যালেন্ডারে তার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।