নতুন উচ্চতায় ডিএসইর প্রধান সূচক

নতুন উচ্চতায় ডিএসইর প্রধান সূচক

নতুন উচ্চতায় উঠে এসেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর প্রথম মিনিটেই ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৪৫ পয়েন্টে পৌঁছে যায়।

এর মাধ্যমে ডিএসইএক্স চালুর পর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসে। মূল্য সূচকের ভুল গণনা বন্ধ করতে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি নতুন সূচক ডিএসইএক্স চালু করে ডিএসই। শুরুতে সূচক গণনা শুরু হয় ৪ হাজার ৫৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট দিয়ে।

এরপর কয়েক দফা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর ৫ হাজার ৩৩৪ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে উঠে আসে ডিএসইএক্স। বৃহস্পতিবারের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল ডিএসইএক্সের সর্বোচ্চ অবস্থান। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার লেনদেনের প্রথম মিনিটেই ডিএসইএক্সের নতুন রেকর্ড গড়লো।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১০ সালের পতনের পর বাজার কয়েকবার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে এবারের বাজার চিত্র অন্য বারের তুলনায় ব্যতিক্রম। বাজারের গতি প্রকৃতি দেখে বোঝা যাচ্ছে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আসছে। এটি বাজারের জন্য ভালো।

তাদের মতে, বর্তমানে সূচক ও লেনদেনের যে গতি দেখা যাচ্ছে তাতে খুব দ্রুতই সূচক ও লেনদেনে নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে। এ মুহূর্তে বিনিয়োগকারীদের বুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে। হুজুগে বা গুজবে বিনিয়োগ না করে তথ্য যাচাই-বাছাই করে সচেতনভাবে বিনিয়োগ করতে হবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক সূচকগুলো পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক। তারই প্রভাব দেখা যাচ্ছে শেয়ারবাজারে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের ভালোভাবে তথ্য যাচাই করে বিনিয়োগ করতে হবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, বর্তমাদে সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। সুদের হারও বেশ কম। স্বাভাবিকভাবেই এর একটি ইতিবাচক প্রভাব শেয়াবাজারে পড়ছে। তবে এটিও মনে রাখতে হবে শেয়ারবাজারে উত্থান ও পতন উভয়ই থাকবে। টানা পতন যেমন ভালো না তেমনি টানা উত্থানও বাজারের জন্য খুব পজেটিভ না।

‘ছোট ছোট উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে বাজার এগিয়ে যাওয়ায় পজেটিভ। গত কয়েকদিন বাজারে টানা উত্থান প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের খুবই সচেতনভাবে বিনিয়োগ করতে হবে। গুজবে কান না দিয়ে, কোম্পানির সার্বিক আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে’ বলেন মো. বখতিয়ার হাসান।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবারের লেনদেনের প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটি ১১ পয়েন্ট, ১০টা ৫০ মিনিটে ১৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।

এরপর কিছুটা নেতিবাচক হয়ে পড়ে সূচকে। বেলা ১১টায় ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে যায়। পরবর্তী ৫ মিনিট সূচকের এ নেতিবাচক প্রবণতা অব্যহত থাকায় ১১টা ৮ মিনিটে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে যায়।

তবে এরপর আবার ঘুরে দাঁড়ায় সূচক। এ প্রতিবেদ লেখা পর্যন্ত বেলা ১১টা ২১ মিনিটে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।  লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১৭৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। আর ৯৬টি দাম কমেছে এবং ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

লেনদেনে শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানির তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, বারাকা পাওয়ার, আইএফআইসি, ওরিয়ন ফার্মা, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ন্যাশনাল টিউব, ইফাদ অটোস, এমজেএল এবং ডেক্সো।

অর্থ বাণিজ্য