রমজানে চিনি ও ভোজ্য তেলের সংকট হবে না: বাণিজ্যসচিব

রমজানে চিনি ও ভোজ্য তেলের সংকট হবে না: বাণিজ্যসচিব

বর্তমানে দেশে চিনি ও ভোজ্য তেলের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং এ দু’টি পণ্য আরো আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছেন আমদানিকারকরা। এ অবস্থায় আসন্ন রমজানে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চিনি ও ভোজ্য তেলের কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মোঃ গোলাম হোসেন।

একই সঙ্গে রমজানে সারাদেশে এ দুই পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্য মজুদ, এ দুই পণ্যের আমদানি পরিস্থিতি, পরিবেশক পদ্ধতির কার্যকারিতা ও আসন্ন রমজান উপলক্ষে সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সচিব বলেন, বর্তমানে দেশে চিনিকল মালিক ও টিসিবিসহ প্রায় ৪ লাখ টন চিনি মজুদ রয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আরো ৩ লাখ টন চিনি আমদানি জন্য এলসি খোলা হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে চিনির মজুদ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৭ লাখ টন। এর মাধ্যমে আগামী ৩/৪ মাস দেশে চিনির কোনো সঙ্কট হবে না।

গোলাম হোসেন বলেন, অপরদিকে বর্তমানে মিল মালিকদের কাছে বর্তমানে ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিকটন ভোজ্য তেল মজুদ রয়েছে এবং আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে আরো ২ লাখ ১৩ হাজার মেট্রিক টন তেলের। সুতরাং কোনো সমস্যা হবে না।

এরপরও রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে এলসি খুলতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংক-কে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
চিনি ও ভোজ্য তেলের বর্তমান বাজার মূল্য পরিস্থিতি সম্পর্কে বাণিজ্য সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মুল্য বৃদ্ধি, দেশে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির অনিবার্য কারণে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য বেড়েছে।

তবে ভোজ্যতেলের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হলেও বাজারে চিনির মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার ও পার্শ্ববর্তী যে কোনো দেশের তুলনায় কম রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এটা কী ভাবে সম্ভব সেটা আমার বোধগম্য নয়’।

প্রসঙ্গক্রমে সচিব জানান, বর্তমানে চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১৫ টাকা থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডলারের মূল্য ১৫ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তেলের মূল্যের ওপর এর প্রভাব পড়েছে।

সচিব জানান, সভায় চিনি ও ভোজ্যতেলের কোনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। তবে অতিমূল্য বা অন্যায্য মূল্য নির্ধারণ না করার জন্য ব্যবসায়ীদের আহবান জানানো হয়েছে।

ডিম আমদানি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘ডিম আমদানির বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি’।
তবে ব্যবসায়ীমহল থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ডিম ও মুরগীর বাচ্চা আমদানির ক্ষেত্রে যেসব দেশে বার্ডফ্লু নেই সেসব দেশ থেকে আমদানি করতে হবে। একইসঙ্গে আমদানি করা ডিম বিমান বন্দরে পৌঁছার দুই ঘণ্টা আগেই প্রাণিসম্পদ বিভাগকে অবহিত করতে হবে। দেশে প্রবেশের আগে প্রাণি সম্পদ বিভাগ এটা পরীক্ষা করে দেখবে। ব্যবসায়ীদের এ প্রস্তাবের বিষয়ে সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নি।

মতবিনিময় সভায় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এটিএম মর্তুজা রেজা চৌধুরী, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ, এনবিআর, বিটিসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিটি গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপসহ চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ বাণিজ্য