জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলায় সাক্ষের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
ফলে রাডার ক্রয় দুর্নীতির মামলা আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাতিল হয়েছে।
রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসক) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
বিচারিক আদালতে মামলাটি যে অবস্থায় আছে সেখান থেকে চলবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। অর্থাৎ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর তাদের জবানবন্দি ও জেরা শেষ করেছেন। এখন নতুন করে আর কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে না।
তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলা নিম্ন আদালতে স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলায় বাকী সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি দিয়ে ও ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন চেম্বার আদালত।
গত ২৪ নভেম্বর এরশাদের রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলায় বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের অনুমতি ও ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন এই মামলার আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ।
এরশাদ ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। মামলার শুরু থেকে মুসা পলাতক রয়েছেন।
মামলাটি কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তৎকালীন বিমানবাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দু’টি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনেন। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।