বিস্ফোরণের ১১ বছর পরও জ্বলছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অন্যতম বৃহৎ গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড ও এর আশপাশ এলাকা। প্রতিনিয়ত গ্যাস উদগীরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এখানে।
টেংরাটিলা গ্রামের পুকুর, জমি, বিভিন্ন সড়ক এমনকি বসতঘরের ফাটল দিয়ে বুদ বুদ করে গ্যাস বেরোনোর ফলে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
স্থানীয় টেংরাটিলা গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আজিমুদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, গ্যাসফিল্ডের আশপাশ এলাকা, টেংরাটিলা গ্রামের পুকুর, জমি, জলাশয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সড়ক এমনকি বসতঘরের ফাটল দিয়ে বুদ বুদ করে এখনও গ্যাস উদগীরণ হচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাবে গাছপালাসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী বীরপ্রতিক জানান, একাধিকবার বিষয়টি কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর ঢাকা অফিস সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ড বিস্ফোরণের পর অনেক গ্যাস পুড়ে গেছে। স্থানীয় কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখেছি।
তিনি বলেন, নাইকো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের মামলা চলমান রয়েছে। কিছুদিন আগে একটি বিশেষজ্ঞ দল এলাকায় পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা তাদের রিপোর্টে খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও একই বছরের ২৪ জুন দু’দফা বিস্ফোরণের ফলে গ্যাসফিল্ডের প্রোডাকশন কুপের রিগ ভেঙে বিকট আওয়াজে ভয়াবহ কম্পনসহ আগুনের লেলিহান শিখায় কমপক্ষে ৫২ বিসিক গ্যাসের রিজার্ভ ধ্বংস হয়। ২০০-৩০০ ফুট ওপরে আগুন ওঠানামা করে এক মাসেরও বেশি সময় জ্বলার পর আগুন নিভে যায়।
এতে হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্টের পাশাপাশি আশপাশের টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরিশপুর, কৈয়াজুরি ও শান্তিপুর গ্রামের মানুষের বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত ও পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীকে নামকাওয়াস্তে ক্ষতিপূরণ দিয়ে মামলা জটিলতার কারণে গ্যাসফিল্ডের সকল যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেয় নাইকো কর্তৃপক্ষ।