দীর্ঘ ১৭ দিন যাবত সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় কাতরাচ্ছে মর্মান্তিক শারীরিক নির্যাতনের শিকার অজ্ঞাতনামা (১৮) বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবতী।
মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি হওয়া ওই যুবতীর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও কথা বলতে না পারায় এখনও তার পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল সরেজমিনে গেলে ওই যুবতী ইশারায় কিছু বলতে চাইলেও তা বোঝা যাচ্ছিল না।
স্থানীয়দের ধারণা মেয়েটি ঢাকার কোনো বাসা বাড়িতে কাজ করতো। বাড়ির মালিক তাকে নির্যাতন করে কড্ডার মোড়ে ফেলে রেখে গেছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আকরামুজ্জামান জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়া ও ক্ষতচিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় বাক প্রতিবন্ধী ওই যুবতী। পৌর এলাকার হোসেনপুর মহল্লার বাস শ্রমিক আব্দুল মান্নান তাকে ভর্তি করেন।
বাস শ্রমিক আব্দুল মান্নান জানান, ১৭ ডিসেম্বর সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম মহাসড়কের কড্ডার মোড় এলাকা থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থা পড়ে থাকতে দেখে সদর হাসপাতালে ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার মতো কয়েকটি ক্ষত চিহৃ দেখা যায়। ১৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে তাকে কেউ রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, ধারণা করা হচ্ছে কেমিকেল কিংবা গরম পানি দিয়ে তার শরীর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যখন ভর্তি করা হয় তখন তার অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তবে এখন কিছুটা উন্নতির দিকে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটিকে নির্যাতনের পর অজ্ঞাত কোনো যানবাহনে করে এনে কড্ডার মোড়ে ফেলে রেখে গেছে দুর্বত্তরা। সে বারবার কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করে। আমরা তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর রাখছি এবং পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।