সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের কোন বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। আর সেই লক্ষ্যে মাশরাফি-তাসকিন-সাকিবদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর ব্যাটসম্যানদের সামনে সুযোগ ছিল সিরিজে সমতায় ফেরার। তবে মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সহজ সুযোগ হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৭ রানে হারের সঙ্গে সঙ্গে সিরিজ হারও নিশ্চিত হল মাশরাফি বাহিনীর।
এর আগে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সতর্ক শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম-ইমরুল। তবে অষ্টম ওভারে সাউদির বলে এগিয়ে এসে মারতে দিয়ে শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। এরপর সাব্বিরকে সঙ্গে নিয়ে করেন ৭৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ইমরুল। দলীয় ১০৫ রানে ইমরুলের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাব্বির (৩৮)।
এরপরই ছন্দপতন ঘটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ব্যক্তিগত ১ রান করে ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান বিশ্বকাপের পর থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মাহমুদুল্লাহ। এরপর আগের ম্যাচের অর্ধশতের দেখা পাওয়া সাকিব কেন উইলিয়ামসনের অনেক বাইরের বলে বাজে শট খেলে ব্যক্তিগত ৭ রান করে শর্ট থার্ডম্যানে ব্রুমকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন।
সাকিবের বিদায়ের পর উইকেটে থেকে ইমরুলের সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেননি মোসাদ্দেক। কেন উইলিয়ামসনের অফ স্পিন তুলে মারতে গিয়ে ৩ রান করে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই তরুণ। এ দুই জোনের বিদায়ের পর কয়েরবার জীবন পাওয়া ইমরুল নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেনি। সাউদির বলে ব্যক্তিগত ৫৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান এই ওপেনার। ইমরুলের পর উইলিয়ামসনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তানভীর। শেষ দিকে আর কেউ দাঁড়াতে না পারলে ১৮৪ রানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
এর আগে বৃহস্পতিবার নেলসনের সেক্সটন অভাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি। ইনিংসের প্রথম ওভার করতে গিয়ে মার্টিন গাপটিলকে তুলে নিয়ে দারুণ সূচনা এনে দেন তিনি। লেগ ও মিডেল স্ট্যাম্পের করা বলটি খেলতে গিয়ে মিস করলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন গাপটিল। এরপর দলীয় ৩৭ রানে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে ফেরান তাসকিন আহমেদ।
দলের রান আর ১০ যোগ করতে গিয়ে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান টম লাথামকে হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। লাথামকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। লাথাম রিভিউ নিলেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষেই থাকে।
লাথামের বিদায়ের পর জেমস নিশামকে নিয়ে দলের হাল ধরেন নেইল ব্রুম। চতুর্থ উইকেট ৫১ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। তবে ২৩তম ওভারে নিশামকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক। এরপর দলের রান আরও ৯ যোগ করতেই স্বাগতিকদের আবারও চাপে ফেলে দেন মাশরাফি। আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা কলিন মুনরোকে ফেরান তিনি।
এরপর লুক রঞ্চিকে নিয়ে দলের ইনিংস মেরামতের কাজ চালিয়ে যান ব্রুম। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙ্গেন তাসকিন আহমেদ। রঞ্চির বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কিউইরা। ফলে ২৫১ রানে অলআউট হয়ে যায় দলটি।
তবে এক প্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন ব্রুম। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেন এ ব্যাটসম্যান। ১০৭ বল মোকাবেলা করে নিজের ইনিংসটি সাজান ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে। ৩৮ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রঞ্চি। এছাড়া নিশাম ২৮ ও লাথাম ২২ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৪৯ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। এছাড়া তাসকিন ও সাকিব ২টি করে উইকেট পান।