চিত্রনায়ক ফারুকের কাছে যুবদল নেতাদের কোটি টাকা চাঁদা দাবি

চিত্রনায়ক ফারুকের কাছে যুবদল নেতাদের কোটি টাকা চাঁদা দাবি

চিত্রনায়ক ফারুকের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘খোয়াব নগর’ রিয়েল এস্টেটের কাছে কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে।

বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘খোয়াব নগর’ রিয়েল এস্টেটের পরিচালক ও চিত্রনায়ক ফারুকের ব্যবসায়ী অংশীদার মো. মোমেন মোল্লা এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার ৭৬ নং মঠবাড়ী মৌজাধীন জনৈক জনাব আলীর ওয়ারিশদের (৫ ছেলে ও ৫ মেয়ে) কাছ থেকে এক একর ৬৫ শতাংশ জমি সাড়ে তিন কোটি টাকায় কেনে ‘খোয়াব নগর’ রিয়েল এস্টেট।’

মোমেন মোল্লার অভিযোগ- জমি কেনার পরই স্থানীয় যুবদল নেতা মুজিবুর রহমান, আব্দুর রশিদ, হুমায়ুন কবির ও রুহুল মির কয়েক দফায় এক কোটি, দেড় কোটি, দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন।

তিনি জানান, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রাণনাশের হুমকিসহ বেশ কয়েকবার হামলা করা হয়েছে তার ওপর। এরই প্রেক্ষিতে গত ১ এপ্রিল কালিগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন তিনি (মোমেন মোল্লা)।

তিনি বলেন, ‘বায়না সূত্রে জমি আমাদের দখলে থাকলেও চাঁদার টাকা না দিলে ওই জমিতে যেতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন যুবদল নেতারা।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘গত ১ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’

মামলার আসামিদের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা স্থানীয় ছাত্রদল ও যুবদলের সদস্য।’
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জমির প্রকৃত মালিক জনাব আলীর ছেলে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘চিত্রনায়ক ফারুক ও মোমেন মোল্লার কাছে জমি বিক্রির পর থেকেই আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকছি আমরা।’
কারা হয়রানি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা মূলত জমির দালাল। এছাড়া রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত।’

জমি বিক্রির কারণ জানতে চাইলে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘ওই জমি আমাদের কোনো কাজে আসছে না। তাই ১০ ভাই বোন মিলে জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। টাকা দিয়ে কেউ বাড়ি করবে। কেউ করবে ব্যবসা-বাণিজ্য।’

চিত্রনায়ক ফারুকের কাছ থেকে টাকা বুঝে পেয়েছেন কি না-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বায়নার টাকা বুঝে পেয়েছি। রেজিস্ট্রির সময় বাকি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে মোমেন মোল্লা আরও বলেন, ‘মুজিবুর রহমান, আব্দুর রশিদ, রুহুল মির, হুমায়ুন কবীর মূলত জমির দালাল। তাদের মধ্যস্ততা ছাড়াই জমি কেনায় তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এখন কোটি টাকা চাঁদা না দিলে জমিতে স্কুলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন তারা। অথচ ওই জমি থেকে রায়েরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে।’

এদিকে জরুরি কাজ থাকায় চিত্রনায়ক ফারুক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

এ সময় তার ব্যবসায়ী অংশীদার মো. মোমেন মোল্লা’র করা অভিযোগ পক্ষান্তরে তার নিজেরই অভিযোগ বলেও জানান ফারুক।

রাজনীতি