২০১৭ সালের মার্চ থেকে চালু হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। এরই মধ্যে কুয়াকাটায় ল্যান্ডিং স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। শুধু ল্যান্ডিং স্টেশন থেকেই আসবে ২০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট সুবিধা যা প্রায় আটগুন সম্প্রসারণযোগ্য।
এ সাবমেরিন কেবল পুরোদমে চালু হলে সাধারণ মানুষ দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা পাবে এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে ব্যান্ডউইথ বিদেশেও রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন মাইটভাঙ্গা গ্রামে ২০১৩ সালে ১০ একর জমির উপর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন। ১৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ সংস্থার সম্মেলনে গঠিত সাউথ ইস্ট এশিয়া-মিডল ইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ (এসইএ-এমইউই-৫) আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের অধীনে জাপানের এনইসি ও ফ্রান্সের অ্যালকাটেল লুসেন্ট ২০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এ কেবলটি নির্মাণ করে।
সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, ভারত হয়ে ইউরোপের ফ্রান্স পর্যন্ত বিস্তৃত হবে সংযোগ লাইন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রকল্পের মৌলিক কাজ, বাকিটুকুর জন্য সময় লাগবে মাস তিনেক।
পটুয়াখালী আবদুল করিম মৃধা কলেজের মাস্টারস প্রথম বর্ষের ছাত্র রাজীব পাল জানান, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হলে আমরা দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা পাবো। এতে করে বাংলাদেশ আইসিটি খাতে অনেক এগিয়ে যাবে। যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে আরও বেগবান করবে।
পটুয়াখালী আবদুল করিম মৃধা কলেজের আইসিটি অপরেটার ফুয়াদ হোসেন রাসেল জানান, সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হলে জেলার মানুষ অনেক উপকৃত হবে। এতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে পারবে।
আঞ্চলিক সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সেগমেন্ট কমিশনিং এর কাজ শেষ হলে সাবমেরিন কেবল থেকে ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাবে। এটি চালু হলে লাভবান হবে বাংলাদেশ। কমে যাবে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের মূল্য। প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের লাইফ টাইম শেষ হলেও সচল রাখা যাবে টেলিযোগাযোগ।
পটুয়াখালী টেলিকম বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হলে পটুয়াখালীর সকল এক্সেচেঞ্জগুলো অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সংযুক্ত হবে এবং ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিটিসিএল এর গ্রহকের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, এই ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে আগামী মার্চে দেড় হাজার জিবিপিএস যোগ হলে সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে আর সমস্যা থাকবে না। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পুরপুরি বাস্তবায়ন হবে।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালুর মাধ্যমে দেশের আইসিটি খাতে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে, ও সকল সংকট মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ বিদেশে রফতানি করা যাবে বলে মনে করছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. এস.এম. তাওহিদুল ইসলাম।