আল্লাহ তাআলা কুরআনকে মানুষের জন্য জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে নাজিল করেছেন। শুধু তাই নয়, কুরআনের বিধানকে সহজে বোধগম্য করেই তা বর্ণনা করেছেন। ইতিপূর্বে রমজানের রোজা বিষয়ক আলোচনা হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ পথে অর্থ-সম্পদ-জীবন ত্যাগের আলোচনা হয়েছে। অতঃপর ইসলামের পঞ্চম রুকন হজ সম্পর্কে বিধান তুলে ধরেছেন।
হজ শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত। অর্থ থাকা সত্ত্বেও শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে হজ পালন করা যায় না। যদিও বদলি হজের বিধান রয়েছে। হজ ও ওমরার কার্যক্রম পূর্ণ করার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে হজ ও ওমরা সম্পর্কে বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৯৬নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে হজ ও ওমরা পূর্ণ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কোনো ব্যক্তি যদি নফল হজ ও ওমরা পালনের নিয়তে ইহরাম বাঁধে তবে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
কোনো ব্যক্তি যদি হজ ও ওমরার ইহরাম বাঁধার পর শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয় বা বাধা প্রাপ্ত হয় তবে সে ক্ষেত্রে সহজ লভ্য একটি পশু (গরু, উট, দুম্বা) কুরবানি করে মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হালাল হয়ে যাবে মর্মে কুরআনে নির্দেশ করা হয়েছে।
এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুদাইবিয়াতে কুরাইশদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে সেখানেই কুরবানি করেছিলেন। যদিও তা ছিল হারাম সীমানার বাইরে। আর পরবর্তী বছর ওমরা সম্পাদন করেন। অর্থাৎ তিনি ৬ষ্ঠ হিজরির ওমরা কাযা সপ্তম হিজরিতে আদায় করেছিলেন।
মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হজের ইহরাম থেকে বের হতে হয়। যদি কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্কে প্রদেহ বা ব্যথা হয় অথবা অন্যকোনো অসুস্থতা প্রকাশ পায়, সেক্ষেত্রে ওমরা ও হজের কার্যক্রম সম্পাদনের পূর্বেই মাথা মুণ্ডন করতে পারবে। তবে শর্ত হলো- তাঁকে মাথা মুণ্ডনের জন্য ‘ফিদিয়া’ আদায় করতে হবে।
হাদিসে এ রকম সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ৬জন মিসকিনকে খাদ্য দান অথবা একটি ছাগল জবেহ করার কথা বলা হয়েছে। অথবা তিন দিন রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। আর মিসকিনকে খাদ্য দান, ছাগল জবেহ এবং তিনটি রোজা পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থানকালেই আদায় করতে হবে। অতঃপর নিজগৃহে প্রত্যাবর্তনের পর আরো ৭টি রোজা পালনের কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বোপরি কথা হলো এ বিধান হারাম সীমানার বাইরের লোকদের জন্য প্রযোজ্য।
পড়ুন- সুরা বাকারার ১৯৫ নং আয়াত
পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের বিধান পালন করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী হজ ও ওমরা পালন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর নির্দেশ পালন করে দুনিয়া ও আখেরাতের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।