চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র সাবেক মহাপরিচালক সাদিক হাসান রুমি’র মঙ্গলবারের অসমাপ্ত জেরা আজ বুধবার আবারো শুরু হয়েছে।
দুপুর সোয়া ১২টায় চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মুজিবুর রহমানের আদালতে রুমিকে দ্বিতীয় দিনের মত জেরা শুরু করেন আসামি রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর (ডিজিএফআই’র তৎকালীন পরিচালক) আইনজীবীরা।
এর আগে ১২টার দিকে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কারাগারে থাকা এ মামলার ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ জানান, সাদিক হাসান রুমিকে রেজ্জাকুল হায়দার ছাড়াও আরো কয়েকজন আসামির আইনজীবী জেরা করবেন। রুমির জেরা শেষ হলে পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
এ মামলায় এরইমধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক শিল্পসচিব ড. শোয়েব আহমেদ, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি’র) তৎকালীন চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ইমামুজ্জামান বীরবিক্রম ও সিএমপি’র বন্দর জোনের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহমুদুর রহমানসহ ৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় বর্তমানে মূল ও সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- জামায়াত নেতা মওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র তৎকালীন মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র তৎকালীন পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএল’র সাবেক এমডি মোহসীন তালুকদার, চোরাচালানী হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান ও ট্রলার মালিক দীন মোহাম্মদ।
এছাড়া সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত দু’আসামি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রণ্ট অব আসামের (উলফা) সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নূরুল আমিন বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে তিন বছর অধিকতর তদন্তের পর ২০১১ সালের ২৬ জুন সিআইডি আদালতে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) জেটিঘাটে দশ ট্রাক অস্ত্রের চালানটি ধরা পড়ে।