ফরিদপুরে পরীক্ষামূলকভাবে মাচার উপর পটল আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন সদর উপজেলার কৃষক কলম চৌকিদার।
পটল সবজি হিসেবে যেমন পুষ্টিকর তেমনি সুস্বাদু। অন্যান্য ফসলের চেয়ে পটলের ফলন বেশি হয়ে থাকে। বাজারে দামও ভালো থাকায় মাচা তৈরি করে এখন পটল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর উপজেলার শোলাকুণ্ডু গ্রামের কৃষক কলম চৌকিদার চলতি খরিব মৌসুমে ২৬ শতাংশ ধানের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে মাচা তৈরি করে পটলের আবাদ করেন। আশপাশের জমিতে অন্য কৃষকেরা যেখানে ধানের আবাদ করেছেন, সেখানে কলম চৌকিদার পটল আবাদ করে প্রথম বছরেই সফল হয়েছেন।
পটলচাষী কলম চৌকিদার জানান, জমি তৈরি থেকে শুরু করে বীজ, জৈব সার, বালাইনাশক, সেক্স ফেরোমন ট্রাপ, বিশ টপ, পটলের মাচাসহ সব মিলিয়ে ২৬ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। পটলের লতা রোপণের তিন মাসের মধ্যে পটল তোলা শুরু হয় এবং সারা বছর পটল পাওয়া যায়।
মৌসুমের শুরুতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হলেও এখন বাজারে শীতের সবজি ওঠায় ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৬ শতাংশ জমি থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার পটল বিক্রি হয়েছে। সামনে আরও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয়ের আশা করছেন এই কৃষক।
বাড়ির নারী ও শিশুরাও মাচায় পটল চাষে সহযোগিতা করে থাকেন বলে জানান কলমের স্ত্রী সালমা বেগম। পটল ক্ষেতের আগাছা দমন থেকে শুরু করে সেচ দেয়া, মাচা তৈরিসহ সব কাজে স্বামীকে সহযোগিতা করেন তিনি। তাদের এই পটল চাষে সাফল্য দেখে অনেক কৃষকই পটল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, পটল লতানো প্রকৃতির উদ্ভিদ তাই- এগুলো মাটির উপর কিংবা খড় বিছিয়ে চাষ করলে গায়ে সাদা সাদা ফ্যাকাশে বা হলুদ বর্ণের হয়ে পড়ে। এতে পটলের বাজারমূল্য কমে যায়। তাই বাঁশের আনুভূমিক মাচা ও রশি দিয়ে তৈরি উলম্ব মাচায় পটল চাষ লাভজনক হয়ে থাকে।
এছাড়া নিরাপদ সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদের সব ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, যাতে কৃষকেরা বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করতে পারে।
চলতি খরিব মৌসুমে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে পটল আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা।