আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, সংবিধানে উল্লেখ থাকা জনগণের মৌলিক অধিকারসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো সকলেই আইনের সুরক্ষা প্রাপ্তির সমান অধিকারী। জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকারে বর্তমান সরকার বিশ্বাসী এবং এ অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
শনিবার ঢাকায় রেডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ‘সরকারি আইনগত সহায়তা কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার উদ্বোধনী পর্ব এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়াধীন ‘প্রমোটিং এক্সেস টু জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, যারা আইনের সহায়তা পায় না রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের এ সহায়তা দেওয়া। এজন্য বর্তমান সরকার অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের জন্য সরকারি আইনগত সহায়তা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তা বেগবান করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এ কর্মসূচিকে গতিশীল করতে তিনি বিচারক এবং আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আশীষ রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রমোটিং এক্সেস টু জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক সালমা বিনতে কাদির এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
মতবিনিময় সভায় ২২টি জেলার জেলাজজ ও আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সহায়ক কর্মকর্তা এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ অংশ নেন।
সরকারি আইনগত সহায়তা কর্মসূচিকে গতিশীল করতে সরকার পৃথক ডাইক্টরেট প্রতিষ্ঠা করছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় পৃথক লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন এবং স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এ কর্মসূচি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কমিটি গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার কারণে জনগণ সুবিচার থেকে বঞ্চিত হন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দীর্ঘসূত্রতা থেকে মুক্তি দিতে এবং আদালতে মামলার জট কমাতে পুরোনো দেওয়ানি ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআর ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক অনুসরণের বিধান সংশোধিত কার্যবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আইনজীবীদের আদালত বর্জন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনজীবীদের আদালত বর্জনের নিয়ম নেই এবং তা শোভনীয়ও নয়।
এ বর্জন আদালত অবমাননা কিনা তা বিবেচনার এখতিয়ার ট্রাইব্যুনালের বলে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচারে যাতে কোন বাঁধা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারেও তিনি জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
একইদিন সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।