নারীর বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স শর্তহীনভাবে ১৮ বছর বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
এ সময় বক্তারা মেয়েদের বিয়ের বয়স শর্তসাপেক্ষে (বিশেষ বিধান) ন্যূনতম ১৬ বছর রেখে নতুন আইন পাশ না করে শর্তহীনভাবে ১৮ বছর বহাল রাখার দাবি জানান।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনুর সঞ্চালনায় বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি।
তিনি বলেন, সরকার মেয়েদের বিয়ের বয়স শর্তসাপেক্ষে (বিশেষ বিধান) ১৬ বছর রেখে শিগগিরই বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাশ করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা মনে করি, আইনটি পাশ হলে তা হবে নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধক। এরফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা-এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্থ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে নারীর বিয়ের বয়স ন্যূনতম ২১ বছর করার জন্য বেগম রোকেয়া আন্দোলন করে সফল হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ রয়েছে। কিন্তু এখন আবার সরকার পায়তারা করছে বয়স ১৮ বছর থেকে নামিয়ে ১৬ করার। আমরা এটা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমরা আমাদের মেয়ে সন্তানদের জীবন হুমকির মুখে ফেলতে চাই না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমেন ও জেণ্ডার স্ট্যাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া হক বলেন, বাল্যবিবাহের শিকার কন্যাশিশুরা মানসম্মত শিক্ষা, পুষ্টি ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তারা অল্প বয়সে মা হতে গিয়ে অনাকাঙ্খিত মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং জন্মদেয় অপুষ্ট শিশু।
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আমরা চাই কোনো শর্তছাড়াই মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ই বহাল রাখা। বরং তা ২১ বছর করার দাবি জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সমাজের সকল পেশাজীবি মানুষকে সচেতন হয়ে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।