ফিলিস্তিন অঞ্চলে মাইকে আজান নিষিদ্ধের প্রস্তাব সম্বলিত বিলের প্রতিবাদে ইসরাইলের সংসদ নেসেটে আজান দিয়ে প্রতিবাদ জানালেন এক মুসলিম পার্লামেন্ট সদস্য। অভিনব পদ্ধিতে প্রতিবাদ জানানো ওই ফিলিস্তিনি এমপির নাম আহমাদ আল তিবি (Ahmad al-Tibi)।
৫৭ বছর বয়সী ইসরাইল পার্লামেন্ট নেসেটের সদস্য আহমাদ তিবি সোমবার (১৪ নভেম্বর) সংসদ চলাকালে বক্তব্যের সুযোগ পান।
সংসদে বক্তব্যের সুযোগ পেয়ে তিনি শব্দ দূষণের অভিযোগ তুলে ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় ফিলিস্তিনের মসজিদে মাইকে আজান সম্প্রচার নিষিদ্ধের প্রস্তাব অনুমোদনের তীব্র সমালোচনা ও বিরোধীতা করেন। এর পর তিনি আজান দেওয়া শুরু করেন। এ সময় সংসদে তুমুল হৈ-চৈ শুরু হয়। তিনি সেদিকে ভ্রক্ষেপ না করে আজান শেষ করে ডায়াস ছাড়েন।
আজান দেওয়ার আগে সংসদের বক্তব্যে আহমদ তিবি বলেন, আজান সীমিত করার প্রস্তাবিত বিল সম্পূর্ণ অন্যায়। এটা ইসরাইলি সম্প্রদায়ের ফ্যাসিবাদী চিন্তার প্রতিফলন। এটা কথিত ইসলামফোবিয়া থেকে করা হচ্ছে। এর ফলে এ অঞ্চলে শান্তি প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হবে, সংঘাত বাড়বে।
তিনি আজান বন্ধসহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নানারকম অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং নেতানিয়াহু সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।
তার বক্তব্য ও আজানকে সমর্থন করেন আরেক সংসদ সদস্য তালেব আবু ইরার (Taleb Abu Arar)।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ইসরাইলের মন্ত্রিসভা বাইতুল মোকাদ্দাসসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য মসজিদে মাইকে আজান নিষিদ্ধের প্রস্তাব সম্বলিত বিল অনুমোদন করা হয়। শিগগিরই এই প্রস্তাব ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে পাঠানো হবে। নেসেটে অনুমোদিত হলে এটি আইনে পরিণত হবে এবং এরপর ফিলিস্তিনি মসজিদগুলো থেকে আর মাইকে আজান দেওয়া যাবে না।
ইহুদিবাদী ইসরাইল এর আগেও একবার মসজিদের মাইকে আজান প্রচার বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন এর অজুহাত হিসেবে বলা হয়েছিল ‘জাতিগত ও উস্কানিমূলক বাণী’ প্রচার বন্ধ করার লক্ষ্যে এটি করা হচ্ছে। আর এবার বলা হচ্ছে, উচ্চস্বরে আজান প্রচারের ফলে সাধারণ মানুষ ‘বিরক্ত’ হচ্ছে।
পক্ষান্তরে মানবাধিকার কর্মীরা তেল আবিবের এ পদক্ষপকে জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন। ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে আজান বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগকে জাতিগত বিদ্বেষ বলে মনে করছেন তারা। তারা বলছেন, বিষয়টি ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ ও অন্যায়’।