স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চিনিকলের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতাল পরিবারগুলোর জন্য সরকারিভাবে ঘর বানিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোথায় এসব বাড়িঘর তৈরি করে দেয়া হবে, তা সংশ্লিষ্ট দফতরকে দেয়া নির্দেশে বলা আছে।
বুধবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, সাঁওতাল ও বাঙালিদের ১৮টি গ্রামের ১ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে। পরে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ আখ চাষের জন্য সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে। সেই জমি ইজারা দিয়ে ধান ও তামাক চাষ করে অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে তার দখল ফিরে পেতে আন্দোলনে নামে সাঁওতালরা।
এরপর সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে বিরোধপূর্ণ চিনিকলের জন্য অধিগ্রহণ করা ওই জমিতে কয়েকশ ঘর তুলে সাঁওতালরা বসবাস শুরু করেন। গত ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ জমি উদ্ধার করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় সাঁওতালদের বাড়িঘর লুটপাট হয়। পুলিশের ভাষায়, তারা সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায়। ওই ঘটনায় নিহত হন তিন সাঁওতাল। আহত হন অনেকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো দলীয় কোন্দল ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দলীয় কোন্দলের আভাস পেলে প্রধানমন্ত্রীকে বলতাম। আমি দেখেছি, কেউ ষড়যন্ত্র বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নাসিরনগরের ঘটনায় এখনো তদন্ত চলছে। বেশ কয়েকটি দল কাজ করছে। কী পাওয়া গেল, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা বলা যাবে না।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা তারা নিয়েছেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাইলে সাতদিন আগে এই বিষয়ে পুলিশকে জানাতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এবারের বিজয় দিবসে সূর্যাস্তের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে- এমন কোনো নির্দেশনা নেই। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অনুষ্ঠানগুলো শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।