রাজধানীর উত্তরা থেকে ভুয়া লটারি জেতার ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪ নাইজেরিয়ান নাগরিককে আটক করেছে র্যাব। তারা ৬ মাসের পর্যটক ভিসা (টুরিস্ট) নিয়ে বাংলাদেশে এসে ভুয়া লটারি জেতার ক্ষুদেবার্তা দিয়ে প্রতারণা করতেন। এই প্রতারণামূলক ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও। র্যাব কর্মকর্তারাও এই ক্ষুদেবার্তা পেয়েছেন।
সোমবার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ। আটক ৪ নাইজেরিয়ান হচ্ছেন, ইব্রাহীম (২৯) কেলেছি প্রিন্স জন (৪০), ঙ্কেম স্যামুয়েল আজুবিউকে (৩৫) এবং ডেনিস অকুদিরি ওরফে চিফ (৪০)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক বলেন, আসামিরা উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের একটি হোটেল থেকে র্যান্ডমলি নম্বরে কোটি টাকার লটারি জেতার ভুয়া ক্ষুদেবার্তা পাঠাতেন। যারা লটারির পুরষ্কার পাওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে এসএমএস-মেইলে নিজেদের তথ্য পাঠাতো তাদের সঙ্গে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা হত। যোগাযোগের এক পর্যায়ে তারা ফোন দিয়ে বলে, ‘আপনার পুরষ্কারটি শাহজালাল বিমানবন্দরের এসে পৌঁছেছে। সঙ্গে একটি ফ্রি এলইডি টিভি রয়েছে। টিভিটিসহ পুরষ্কারের অংক খালাস করতে টাকা প্রয়োজন। টাকা বিকাশ করলেই আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে পুরষ্কার।’ এধরণের ফোন দিয়ে একজন থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা নেয়ার প্রমানও পাওয়া গেছে।
র্যাব গোপন সংবাদ পায় যে, ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়েন ইব্রাহীম। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বাকি ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল, ২৪টি দেশি-বিদেশি সিম, ৩টি ল্যাপটপ, ৫টি মডেম, ৫টি ক্রেডিট কার্ড, ১টি ডেবিট কার্ড, বাংলাদেশি সত্তর হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত সীমের মধ্যে একটি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা। বাকিগুলো সংগ্রহ করা। এধরনের অপরাধীদের চক্র বেশ বড়। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশির যোগসাজশ রয়েছে। চক্রের অন্যান্যরা মূলত গার্মেন্টস ব্যাবসা ও ফুটবল খেলার নামে বাংলাদেশে এসে এ ধরনেরকর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরে বলেও তথ্য রয়েছে।
এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করে আসামিদের স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।