ঢাকা: চলমান ‘পল্লী জীবিকায়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ৩৫০ শতাংশ ও মেয়াদ বাড়িয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর উন্নয়নে সম্প্রসারিত কার্যক্রম নিতে যাচ্ছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।
সংশোধিত প্রকল্পে ৫০টি নতুন উপজেলাকে অন্তর্ভূক্ত করে বিত্তহীন মহিলা ও পুরুষ সমবায় সমিতির মাধ্যমে প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের শেয়ার এবং সঞ্চয় জমার ব্যবস্থা করা হবে। বিলুপ্ত ছিটমহলের নিম্ন আয়ের মানুষকে পুঁজি গঠনসহ আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা হবে।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। মেয়াদ ছিল ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ১ হাজার ১৫৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৪৮৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর মেয়াদ আরও দুই বছর বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
সংশোধিত প্রকল্পে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর ৫০টি নতুন উপজেলা অন্তর্ভূক্ত করে প্রকল্প এলাকার সম্প্রসারণ, পোস্ট ট্রেনিং সাপোর্ট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ খাতে আরও ৪২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এজন্য প্রকল্প অফিসে একজন উপ-পরিচালক, দু’টি আঞ্চলিক দফতরের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২২ জন নিয়োগ, ছিটমহলগুলোর বিলুপ্ত দফতরের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫৭ জন এবং ৫০টি উপজেলা দফতরের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৬০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
নানা কাজের প্রশিক্ষণ খাতে ১৬৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকাসহ সরবরাহ ও সেবা খাতে ব্যয় বাড়ানো হবে। প্রকল্প এলাকায় মোটরসাইকেল, কম্পিউটার, আসবাবপত্র ও যানবাহন খাতে আরও ১৮ কোটি ৮৭ লাখ বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রকল্পের মূলধনের পরিমাণও ৭০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪৯৫ কোটি টাকা হচ্ছে।
১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ৩৭ হাজার ৩৮৬ জন মানুষের উন্নয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। এর মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি এবং নীলফামারীতে চারটি বিলুপ্ত ছিটমহলের অবস্থান।
বিআরডিবি’র যুগ্ম পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছিটমহলবাসীর ভাগ্য ঝুলে ছিল। তাদের কোনো উন্নয়ন হয়নি। চলমান প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে মূলত বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর উন্নয়নের কথা চিহ্নিত করেই’।
তিনি আরও বলেন, ‘সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর জন্য ঋণের ব্যবস্থা করবো, যেন তারা ছোট ছোট আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড করতে পারেন। নতুন নতুন জনবল নিয়োগ করবো। এসব জনবলের বেতন দিতে হবে। নতুন জনবলের জন্য অবকাঠামোগত কিছু কাজও করবো। প্রয়োজনীয় যানবাহন ও কম্পিউটার কিনবো’।