দেশের উন্নয়নের জন্য শান্তি-শৃংখলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখা জরুরি : প্রধানমন্ত্রী

দেশের উন্নয়নের জন্য শান্তি-শৃংখলা ও সম্প্রীতি বজায় রাখা জরুরি : প্রধানমন্ত্রী

pm-hmঢাকা, ১২ নভেম্বর ২০১৬ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশবাসীকে দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহবান জানিয়ে বলেছেন, দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে অব্যাহত রাখার জন্য শান্তি শৃংখলা বজায় রাখাটা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জনগণের প্রতি- সকলে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। যে কারণে এটা আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ অন্তত নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তুু এখনও কিছু কিছু যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো যেন আর না ঘটে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে মত বিনিময়কালে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বিএনপি’র কোন এক নেতা কিছুদিন আগে বলেছিলেন-‘আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কি দেখেছে, নভেম্বর মাসে হবে আসল আন্দোলন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আন্দোলন যদি হয় আবারো এই মানুষ খুন করা, মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো, সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত-নির্যাতন করা এবং এর মাধ্যমে দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করা- সেই আন্দোলন কোনদিনও মানুষের সমর্থন পাবে না। এই পথ জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আহবান থাকবে- আমাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আমাদের সর্বত নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণীও তাই। এখানে সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবেন। এটাই ইসলামের কথা এটাই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কথা এবং আমরা সেটাই মেনে চলি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা কিন্তু ইসলামের পথ না।
প্রধানমন্ত্রী এদিন রাজশাহী বিভাগের ৫টি স্থানের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন। বিভাগের ৮টি জেলার ২ হাজার ৯৮১টি গ্রামে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানটি দেখানো হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে গণভবনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটাই চাইব যে আমাদের দেশের সকলে, যেমন মসজিদের ইমামরা জুম্মা’র নামাজের আগে যে খোৎবা দেন সেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সম্পর্কে আমাদের ইসলাম ধর্মে কি আছে, নবীজি কি বলেছেন, কোরআন শরীফে কি বলা আছে, তা মানুষের কাছে তুলে ধরবেন। বিষয়টা মানুষকে ভালোভাবে জানাতে হবে। যাতে কেউ বিপথে না যায়। এ ধরনেরর আত্মঘাতী পথে পা না বাড়ায়।
তিনি বলেন, আমি অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবী, সাধারণ জনগণ সবাইকে আমি আহবান জানাবো- সকলের যৌথ উদ্যোগেই আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জ্বালাও-পোড়াও মানুষ হত্যা এবং মানুষকে পুড়িয়ে মারা এটা কখনও মনুষত্যের কাজ না। একথা সব সময় সকলকেই মনে রাখতে হবে। আমি চাই আমাদের দেশের সবসময় সম্প্রীতি বজায় থাকবে, দেশ উন্নত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিশ্ববাসী স্বীকার করে- বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হয়। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি ৪৫ বছর হয়ে গেছে। আজকে যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে এই বাংলাদেশ আরো বহু আগেই উন্নত হতে পারত। কিন্তু তাঁর সেই অসমাপ্ত কাজ আমাদেরকে সম্পন্ন করতে হবে। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুন-খারাপির পথটা এদেশে আবারো দেখিয়ে দিলো (পঁচাত্তরের জাতির পিতাকে হত্যার পরে) বিএনপি-জামায়াত, এটা এদেশে নতুন কিছু না। তাদের সেই গুলি কর বৃষ্টির মত গুলি কর। মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী- এই যে কথাগুলি সেগুলো নিশ্চই বাংলাদেরশের মানুষ ভুলে যায়নি। তারা ঐ গুলি কর, মানুষ খুন কর-এসবই তারা জানে। এই কাজ তারা বারবার করেছে এবং তারাই এদেশের ছেলে-মেয়েদের বিপথে নিয়ে গেছে। উস্কে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মনে আছে রাজশাহীতে বাংলাভাই সৃষ্টি। প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা মিছিল করছে ট্রাকে। পুলিশ তাদের পাহাড়া দিচ্ছে। বিএনপির মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী তাদের মদদ দিচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে, সেটা আমরা দেখেছি। আর এই রাজশাহীবাসীই সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন- মানুষ হত্যা করে কিভাবে পায়ে বেঁধে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকে ৮ টুকরা করা হয়েছে। নিরীহ মানুষ, পুলিশ হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামাতের উদ্দেশ্যে বলেন, এদের চরিত্র কোনদিনও শোধরাবে না। আর এই সন্ত্রাসের পথ বেয়েই আজকে এসেছে- নতুন উপসর্গ, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করা।
শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এর বিরুদ্ধে সকলে মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য এর আগেও আমি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তখনও আমি আহবান করেছিলাম, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে দেশবাসীকে আহবান করেছিলাম যে, সকলে সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যেন বাংলার মাটিতে স্থান না পায়।

বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করার কথাও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পূর্বে দেশের জনগণের দুরাবস্থার চিত্র তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে গড়ে তুলছিলেন তখন একাত্তরের পরাজিত শক্তি চক্রান্ত করে জাপিতর পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। দেশে অন্ধকার নেমে আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এ সরকারের উন্নয়ন-জনসেবায় মানুষ বুঝতে পারে, সরকার জনগণের সেবক।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের খন্ড চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা আজকে শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছি,স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌছে দিয়েছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তারা ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক, উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি, উপবৃত্তি চালু করেছি।
যোগাযোগের জন্য বিশাল বিশাল কর্মযজ্ঞ আমরা শুরু করেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের মধ্যে একটি যোগাযোগ কাঠামো গড়ে তুলছি। সেখানে রেল যোগাযোগ পুণ:প্রতিষ্ঠা করেছি সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। যে রেল যোগাযোগ একরকম বন্ধই করে দিয়েছিল বিএনপি সরকার। আমরা নদীগুলো ড্রেজিং করে নৌ পথ সচল করে দিচ্ছি। রাস্তাঘাট,পুল,ব্রীজ তৈরি করে দিচ্ছি। এমনকি গ্রামের ভেতরেও সংযোগ সড়কগুলো করে দিচ্ছি। যাতে করে মানুষ ভালভাবে চলাচল এবং তাদের মালামাল পরিবহন করতে পারে। সেই সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ পেলাম মাত্র ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট। অথচ এই সাত বছরের মধ্যে আমরা ১৫ হাজার মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। এত অল্প সময়ে যা পৃথিবীর অন্যকোন দেশ করতে পারেনি। কিন্তু, বাংলাদেশ পেরেছে। আজকে সেই বিদ্যুৎ সকলের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। যেখানে বিদ্যুতের গ্রীডলাইন নাই সেখানে আমরা সোলার প্যানেলে মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি। ছোট ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেমন আমরা করে দিয়েছি তেমনি এখন আমরা মেগা প্রজেক্ট নিচ্ছি । বড় বড় পাওয়ার প্লান্ট করে দিচ্ছি। কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট করছি। এভাবে আমরা সমগ্র বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ যেন পৌঁছায় তার উদ্যোগ নিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন,‘আজকে যেমন ৭৮ শতাংশ লোক বিদ্যুৎ পাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই- প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুতের আলো জ্বালবো।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেই উন্নয়নের গতিটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। এই গতিটা কেউ যেন থামাতে না পারে এজন্য জনগনকেই সতর্ক থাকতে হবে। আমি আপনাদের সকলেরই সহযোগিতা চাই।
শান্তিপূর্ণ একটা পরিবেশ থাকলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় জঙ্গিবাদের প্রসংগ টেনে বলেন, কয়েকটি ঘটনা কেন কারা ঘটিয়েছে-বিদেশিদের হত্যা করা। আজকে তদন্তে বেরিয়ে আসছে, এগুলো কারা ঘটিয়েছে। এর পেছনে কারা।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কেন তাদের (জঙ্গি হামলায় নিহত নিরীহ বিদেশিদের) দোসটা কি ছিল ?
তিনি বলেন, আসলে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। যারা ঐ আলবদর রাজাকারদের হাতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছিল, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে শাস্তি হয়েছে, ফাঁসি হয়েছে। তারাতো দেশের উন্নতি চায় না-এটা সবাইকে বুঝতে হবে। সকলকে জানতে হবে, কারা এর পেছনে মদদ দানকারি এবং কারা এই পথ দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পথ থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। একটা সামাজিক সুরক্ষা আমাদের সৃষ্টি করতে হবে এবং আমাদের জনপ্রতিনিধি যারা আছেন এবং সব শ্রেনীপেশার মানুষ যারা আছেন- সকলের কাছে আমার এই আহবান থাকবে, সকলে যৌথভাবে আসুন আমাদের এই দেশ প্রিয় মাতৃভূমির জন্য একযোগে কাজ করি।
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় অভিভাবক, শিক্ষক থেকে শুরু করে সকলকে তাদের পুত্র-পোষ্যদের দিকে নজর রাখার এবং তারা কোনভাবেই যেন বিপথে না যায় তার প্রতি লক্ষ্য রাখা এবং দেশব্যাপী সবাইকে সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলা জন্য ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপনে অংশ গ্রহণেরও আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী বিভাগের কয়েকটি জেলার জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়ের পরে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, বিভিন্ন জায়গার যেসব সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা আমার এখানে লিখে রাখা হয়েছে। তা আমরা সমাধানের উদোগ নেব। আর স্কুলের টিফিন বা মিডডে মিলের যেসব জায়গায় সমস্যা রয়েছে সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিত্তশালী এবং বিদ্যালয় কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্তরাই সমাধানের যেন উদ্যোগ নেন, সে সম্পর্কে আমি আগেও বলেছি,এজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেয়া আছে। সরকার সহযোগিতা করবে। তবে, আপনারা নিজেরা উদ্যোগটা নিলেই বিষয়টা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি এখন যথেষ্ট উন্নত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন বজায় থাকে এ বিষয়ে সকলে সচেষ্ট থাকবেন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, সেই সম্প্রীতি বজায় থাকবে। এই দেশ আরো উন্নত হবে এবং বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে।
তিনি বলেন, কোন কোন মহল চায় সব সময় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে। কাজেই এই বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে হবে এবং সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের সাথে কথা বলে আমি খুবই আশান্বিত। রাজশাহীর মত একটি জেলা, যেখানে অনেক সমস্যা ছিল। তার অনেকটাই আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রাটা শুরু হয়েছে সেটাকে যেন ত্বরান্বিত করতে পারি-সেজন্য সকলের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসার বন্দোবস্তো করতে। মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে। এ পর্যন্ত যেটুকু করতে পেরেছি তা কেবল সকলের সহযোগিতার জন্যই সম্ভব হয়েছে।
তিনি আওয়ামী লীগকে ভোট প্রদান করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই আমরা উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।
তার সরকার বগুড়ায় রেল যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাও চাই যে বগুড়ায় রেল লাইন হোক, সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগও নিয়েছি। আমরা চাই প্রতিটি এলাকাই আরো উন্নত হোক এবং উৎপাদিত পন্যের ন্যায্যমূল্য যেন কৃষকরা পায় সেজন্য আমরা খাদ্য গুদামজাত করার জন্য সাইলো নির্মাণ করে দিচ্ছি শান্তাহারে। শিগগিরই এটা উদ্বোধন করা হবে। এটা হলে পণ্য সংরক্ষণ করা যাবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও রক্ষা করা সম্ভব হবে। আর কারো কাছে আমাদের হাত পাততে হবে না।

অন্যান্য বাংলাদেশ শীর্ষ খবর