ঢাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাসিরনগরের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, নিরপেক্ষ বিচারক দিয়ে এই হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
বিএনপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের সময় থেকেই হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে একসঙ্গে বসবাস করে আসছি। সেখানে এখন কয়দিন পরপরই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নাসিরনগরের হামলায় আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, যারা মানুষের অধিকারকে হরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম। কোনো হিন্দুদের বিরুদ্ধে নয়।
সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে হিন্দুদের যত সম্পত্তি দখল হয়েছে, তার ৬০ ভাগ দখল করেছে আওয়ামী লীগ। হিন্দুদের সম্পত্তি দখলের জন্য এই রকম সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটানো হয় বলেও তিনি দাবি করেন।
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে নাসিরনগরে হামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্য সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। আবহমানকাল থেকে আমাদের এ ঐতিহ্য চলে আসছে। কিন্তু যারা ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলছে তাদের শাসন আমলে কেন হিন্দুদের ওপর হামলা হচ্ছে?
রিজভী বলেন, আজকে দেশে কোনো মানুষের নিরাপত্তা নেই, হিন্দুদের উপর নির্বিচারে হামলা করা হচ্ছে মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সমস্ত সাম্প্রদায়িক হামলা মোকাবেলা করতে হবে।
সাবেক সচিব তপন মজুমদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির গবেষণা সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী প্রমুখ।
এদিকে সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নাসিরনগরের মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের দায়ে মৎস ও প্রাণিসম্প্রদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকসহ জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে কয়েকয়েকটি হিন্দু সংগঠন।
পাশাপাশি এই হমলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাশের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। এসময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ ছিলো।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ সচেতন হিন্দু পরিষদ, জনতা ঐক্য পরিষদ এবং শ্রীশ্রী রমনা কালি মন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রম পরিচালনা পরিষদ এবং জাগো হিন্দু পরিষদ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।