শেরপুর শহরের উপকণ্ঠে মৃগী নদীর তীরে তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী জেলা ইজতেমা আজ বৃহস্পতিবার বাদ জোহর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ইজতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও বুধবার বিকেল থেকেই ইজতেমা ময়দানে মানুষের ঢল নামে। বৃহস্পতিবার সকালেই নয় একর জায়গার ওপর টানানো ইজতেমা স্থলের প্যান্ডেল ভরে যায়। জেলার সকল পর্যায়ের মানুষের নজর এখন এই ইজতেমার দিকে। শনিবার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনের এই ইজতেমা।
স্থানীয় তাবলিগের মুসুল্লিরা জানান, ইজতেমা ময়দানে ১৫টি খিমায় ৬টি খিত্তা তৈরি করা হয়েছে। থাকার বেডিংসহ একসঙ্গে নামাজ আদায় করার জন্য প্রায় ৩০ হাজার মুসুল্লির আসন ব্যবস্থা করা হলেও নামাজ আদায় করতে পারবেন প্রায় ৬০ হাজার মুসুল্লি। প্রথম দিনেই ইজতেমা মাঠ ভরে গেছে।
মৃগী নদীর পানি ওজু ও গোসলের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। খাওয়ার পানির জন্য ২০টি নলকূপ ও ১ হাজার লিটারের ২০টি পানির ট্যাংক বসানো হয়েছে। মূল ইজতেমা মাঠের অদূরে নদীর দক্ষিণ তীরে নির্মাণ করা হয়েছে এক হাজার টয়লেট। এজন্য নদীর ওপর তিনটি বাঁশের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুতর পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে জেনারেটরের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
তিনদিনের এ ইজতেমায় ঢাকার কাকরাইল মার্কাস থেকে মুসুল্লিসহ দেশি-বিদেশি তাবলিগ জামায়েতের মুসুল্লিরা দ্বীন ও ইসলাম কায়েমের জন্য দাওয়াত এবং বয়ান করছেন। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের তিনটি তাবলিগ জামাতের ৩ বিদেশি এ ইজতেমায় শরীক হয়েছেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম জানান, ইজতেমা মাঠে প্রশাসনিকভাবে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন শিফটে ২৩০ জন পুলিশ এবং দুই প্লাটুন র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও তাবলিগ জামাতের পাহারায় জামাত ও স্বেচ্ছাসেবকসহ সহস্রাধিক কর্মী কাজ করছেন।
এদিকে, ইজতেমা শুরুর প্রথম দিনেই ফজর নামাজের অজু করতে যাওয়ার সময় এক মুসুল্লীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আবুল হোসেন (৮৫) সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের মান্দাখালি গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার বিকেলে স্থানীয় মুসুল্লিদের সঙ্গে তিনি ইজতেমায় এসেছিলেন। ফজরবাদ ইজতেমা ময়দানে জানাজার নামাজ শেষে তার মরদেহ দাফনের জন্য আত্মীয়রা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।