যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের তুলনায় রাশিয়ার বেশি পছন্দনীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নিয়েছে জনগণ। এতে মনে মনে হয়ত খুশীই হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি এক টেলিগ্রামে এরই মধ্যে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানায়, রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সংকট কাটিয়ে ওঠায় একযোগে কাজ করে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন পুতিন। মস্কো এবং ওয়াশিংটনের গঠনমূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে দু’দেশেরই স্বার্থ সিদ্ধি হবে বলেও আস্থা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকেই রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার পক্ষে কথা বলে এসেছে রাশিয়া। খোদ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক মিত্রই বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট না দিলে পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে হবে বিশ্বকে।
রয়টার্স’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিনমিত্র ভ্লাদিমির জিরিনভস্কি বলেছিলেন, “একমাত্র ট্রাম্পই মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান বিপজ্জনক বিরোধ মেটাতে সক্ষম । অন্যদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ উস্কে দিতে পারেন।”
শুধু রাশিয়ার এমন পক্ষপাতিত্বই নয় বরং নির্বাচনের আগে থেকে ট্রাম্পের মুখেও শোনা গেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসাগাঁথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চেয়ে পুতিন ভাল নেতা বলে প্রশংসা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এছাড়াও, গোপন সার্ভারে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের যোগাযোগ থাকার অভিযোগও উঠেছিল। এর প্ররিপ্রেক্ষিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ থাকা এবং নেতা পুতিন ট্রাম্পকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দেখতে চান বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
এত সবকিছুর পরও ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’- কথার ওপর ভরসা রেখেই তাকে ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ।
ট্রাম্প ছিলেন বরাবরই বেপরোয়া। ব্যবসা থেকে রাজনীতিতে আসা ট্রাম্প কোনওরকম রাজনৈতিক আচরণের তোয়াক্কা করেননি। তার এ অরাজনৈতিক আচরণই জনগণের মন কেড়েছে। প্রাইমারির লড়াই থেকে সব প্রার্থীকে পেছনে ফেলতে শুরু করে শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ রাজনীতিক হিলারিকেও পেছনে ফেললেন ট্রাম্প।
নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন ট্রাম্প অনেকবারই বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক নেতা নন। তার মতো মানুষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার সুযোগ বার বার আসবে না। ক্ষমতা দিলে পরিবর্তন আসবে। সে সুযোগই নিয়ে জনগণ বুঝয়ে দিয়েছে, প্রথাগত রাজনীতির ছকের চেয়ে ছক-ভাঙা ট্রাম্পই তাদের বেশি পছন্দের।