চট্টগ্রাম, ৮ নভেম্বর, ২০১৬ : রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিশাল সমুদ্রসীমা রক্ষায় এবং বিপুল সমুদ্র সম্পদ আহরণে শক্তিশালী, আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য নৌবাহিনী প্রয়োজন।
আজ এখানে বিএনএস বেইজ ঈসা খানে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড কনফার্মেন্ট অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, মৎস্য সম্পদে পরিপূর্ণ, গ্যাস এবং অন্যান্য অনাবিষ্কৃত মূল্যবান খনিজ সম্পদে ভরপুর বিশাল সমুদ্র এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে এবং এই বিশাল সমুদ্র এলাকা থেকে সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সুরক্ষায় শক্তিশালী, আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য নৌবাহিনী গঠনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ বিশাল সমুদ্র এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়। বিপুল সমুদ্র সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়ায় এই সমুদ্রসীমা বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য এই ব্লু-ইকোনমি ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং দেশের উন্নয়নে এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের ৭১০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা রয়েছে এবং এ এলাকার প্রায় তিন কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের জীবন-জীবিকার জন্য সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল।
পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ পরিচালিত হয় এই সমুদ্র পথে এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সে কারণেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সমুদ্র এলাকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার ইন-চিফ বলেন, বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধ জাহাজ, মেরিটাইম হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট সংযুক্ত করায় নৌবাহিনী দ্বিমুখী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি আনন্দের বিষয় যে, দু’টি সাব-মেরিন নৌবহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে যা এই বাহিনীকে ত্রিমুখী বাহিনীতে পরিণত করবে এবং নৌবাহিনী দেশের সার্বিক প্রতিরক্ষা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।
ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদানকালে রাষ্ট্রপতি নৌবাহিনী প্রধান, সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা এবং নৌবাহিনীর সদস্যের প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিভিন্ন অপারেশনাল কার্যক্রমে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, বাহিনী তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা এবং দেশের স্বার্থে ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গৌরবোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ নৌবাহিনী সব সময় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে এবং দেশের প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করবে।’
এর আগে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামুদ্দিন আহমেদ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় নৌবাহিনী একটি চৌকষ দল রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, সেনাবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।