প্রযুক্তি ছাড়া আমরা অচল। সারাদিনের সব কাজে আমরা প্রযুক্তির কাছে দায়বদ্ধ। আমাদের দৈনন্দিন কাজের সবকিছুর সঙ্গেই এর সম্পর্ক অতি নিবিড়। কাজের জন্য আমাদের প্রতিদিন একটি দীর্ঘ সময় কাটাতে হয় কম্পিউটার, ল্যাপটপ আর ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। তবে এই প্রযুক্তির আশীর্বাদ আমাদের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে আসতে পারে খুব জলদি। কারণ বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এই প্রযুক্তির কাছে বন্দি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা তাদের সময় ব্যয় করে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবে, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর। সময়ের চাহিদা তাদের এমন পরিস্থিতিতে ফেললেও পরিবারের উচিৎ তাদের এই সমস্যা থেকে বের করে আনা।
প্রযুক্তি শিশুর জন্য কতটা উপকারী :
প্রযুক্তি আমাদের কাছে আশীর্বাদ। আমরা খুব সহজেই এবং খুব কম সময়েই হাতের নাগালে পাচ্ছি সব তথ্য। আর শিশুদের ক্ষেত্রে এখন তথ্য-নির্ভরশীলতার জন্য প্রযুক্তি শেষ সম্বল। তারা ক্লাসের পড়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রজেক্টর কাজের জন্য তথ্য জোগাড় করে প্রযুক্তি থেকে।
শিশুর একাকিত্বের সঙ্গী প্রযুক্তি। বাইরে যখন খেলার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ নেই তখন এই কম্পিউটার তাদের সম্বল। তাছাড়া শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এটি নানাভাবে সাহায্য করে। সে তার পড়ার ক্ষেত্রে ট্যাবের সাহায্যে পড়া পড়তে পারে। অক্ষর একা একা চিনতে পারে। খেলার ছলে বাসায় বসে নিজের পড়া শেষ করতে পারে।
সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট শিশুকে সাহায্য করে নানাভাবে। বাইরের দেশগুলোয় কী হচ্ছে -তা সে জানতে পারে। শিশুকে সামাজিক হয়ে উঠতে সাহায্য করে এই প্রযুক্তি।
শিশুর বিকাশে প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব :
প্রযুক্তি যেমন বিজ্ঞানের একটি অবিস্মরণীয় আবিষ্কার তেমনি এর ঝুঁকিও অনেক। আর তা যদি হয় শিশুর ক্ষেত্রে, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য হুমকি। একটি শিশু যখন খুব সহজেই হাতের মুঠোয় স্মার্টফোন পেয়ে যায় তখনই সে নানা খারাপ সমবয়সীদের সঙ্গে মিশতে থাকে। যা তাকে ধীরে ধীরে বিপথে নিয়ে যেতে পারে।
ইন্টারনেটে অবাধ আনাগোনা তাকে নানা খারাপ সাইটগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়। যাতে তার কোমল মনে শুরু থেকে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে গেম খেলা তাদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
দীর্ঘ সময় প্রযুক্তির ব্যবহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ করে আনে অনেক সময়। যার ফলে খুব কম বয়সে চোখে কম দেখা শুরু হয়। তাই শিশুকে উচিৎ প্রযুক্তি থেকে দূরে রেখে বই কিংবা পরিবারে সঙ্গে সময় কাটাতে অভ্যস্ত করা।