কুরআন আল্লাহ তাআলার নুর। তিনি বান্দার জন্য এ কুরআনকে রমজান মাসে নাজিল করেন। কারণ মানুষ যেন এ কুরআনের নুর গ্রহণ করে দুনিয়া ও পরকালের জীবন সাজাতে পারেন। রোজা পালনের মাধ্যমে মানুষ আসমানি হিদায়াত গ্রহণের উপযোগী করে নিজেকে তৈরি করতে পারেন।
এ কারণেই হজরত মুসা আলাইহিস সালাম আসমানি কিতাব তাওরাতের হিদায়াত ও কল্যাণ লাভে ৪০দিন রোজা রেখে ছিলেন। আবার হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম ৪০ দিন রোজা রাখার পর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আসমানি গ্রন্থ ইঞ্জিল প্রাপ্ত হন।
এ ধারাবাহিকতায় আল্লাহ তাআলা পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালনরত অবস্থায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর মানবজাতির জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত গ্রন্থ কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৮৫নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা কুরআন নাজিলের উদ্দেশ্য এবং কুরআনের হিদায়াত লাভে রোজা পালনের মাধ্যমে নিজেদের প্রস্তুত করার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। অতপর আল্লাহ তাআলা কুরআনকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত গ্রন্থ হিসেবে পাওয়ার কারণে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণার পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, রমজান মাসে রোজা পালন অবস্থায় নাজিলকৃত কুরআন উম্মাতে মুসলিমার জন্য হিদায়াতের নির্দশন, সঠিক পথ প্রদর্শক এবং ইসলামের বিধান পালনে সত্য-মিথ্যার সুস্পষ্ট পার্থক্যকারী।
অতপর আল্লাহ তাআলা আয়াতে উল্লেখ করেন যারা কুরআন নাজিলের মাস রমজানকে হায়াতে জিন্দেগিতে পাবে তারা যেন এ মাসে রোজা পালন করে। এবং রমজান মাসব্যাপী রোজা পালন তাঁদের জন্য ফরজ।
পূর্ববর্তী আয়াতে রোজার বিধান নাজিলের পর যাদের জন্য রোজা পালন কষ্টকর; তাদের জন্য একজন মিসকিনকে খাওয়ানোর ব্যাপারে বিধান নাজিল হয়েছিল। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা এ আয়াতের মধ্যে ঐ বিধানকে রহিত করে দিয়ে বলেন, যারা রোজা রাখতে সক্ষম কষ্ট হলেও তাদেরকে রোজা রাখতে হবে। ফিদিয়া প্রদানের মাধ্যমে রোজা আদায় তাদের জন্য বৈধ নয়।
অতপর আল্লাহ তাআলা অসুস্থ ও মুসাফিরের রোজা আদায়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। যা তিনি পূর্ববর্তী আয়াতে দিয়েছেন। যা তারা সুস্থ হয়ে এবং সফর শেষ করার পর রোজার সংখ্যা পূর্ণ করবেন।
রোজা রাখা অবস্থায় পিপাসায় কাতর এক ব্যক্তির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সফর অবস্থায় রোজা রাখা নেক কাজ নয়।’ কেননা বান্দার জন্য আল্লাহ তাআলার নির্দেশ এ রকম যে, ‘তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য যা সহজ তারই ইচ্ছা করেন।
আল্লাহ তাআলা সুপথ প্রাপ্ত লোকদেরকে সুস্পষ্ট ভাবে তার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন এ কারণে যে, বান্দা কুরআন থেকে হিদায়াত লাভ করেছেন। কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করেন।
পড়ুন- সুরা বাকারার ১৮৪ নং আয়াত
পরিষেশে…
উল্লেখিত আয়াতটি সুরা বাকারার ১৮৪নং আয়াতের পরিসমাপ্তি। যেহেতু রোজা বান্দার জন্য ফরজ। সুতরাং রোজা পালনের বিষয়ে মানুষের অনেক সমস্যা থাকা স্বাভাবিক। রোজা পালনের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য সুন্দর ও উত্তম ফয়সালা বিধান করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান মাসের রোজাসহ কুরআনের বিধানগুলো যথাযথ পালনের তাওফিক দান করুন। সুপথ প্রাপ্তির কারণে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণার তাওফিক দান করুন। সর্বোপরি তার শুকরিয়া তথা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।