চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস চলতি বছরের মার্চ থেকে একেবারেই লাপাত্তা! মুঠোফোনে, ফেসবুকে, হোয়াটস অ্যাপ-এ; কোথাও নেই! চলচ্চিত্র তো দূরের কথা, তিনি সঠিক কোথায় আছেন এই সন্ধানও দিতে পারছেন না তার কাছের মানুষরা। অপু হঠাৎ এভাবে আড়ালে যাওয়ায় তার অভিনীত কয়েকটি ছবির নির্মাণ কাজ ঝুলে আছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সেসব ছবির নির্মাতারা, মাথায় হাত উঠেছে প্রযোজকদের!
শুধু তাই নয়, চলচ্চিত্রে অপুর দীর্ঘদিনের অনেক সহশিল্পী তার সন্ধান জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তাদেরই একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা মিশা সওদাগর। তিনি চাইছেন, অপু আবারো আগের মতো চলচ্চিত্রে নিয়মিত হোক।
জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে মিশা বলেন, ‘একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ এভাবে হুট করে উধাও হয়ে যাবে এটা হয় নাকি? সেই মার্চ থেকে অপুর সঠিক কোনো খোঁজ কেউ দিতে পারছেন না। পত্র-পত্রিকার বরাত দিয়ে মাঝে মধ্যে জানছি অপু নাকি বর্তমানে ভারতে আছেন! তাও উড়ো খবর, যার কোনো সত্যতা নেই। তার মতো একজন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকার কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না।’
প্রশ্ন তুলে মিশা আরো বলেন, ‘অপু আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির একজন সদস্য। এতগুলো মাস তার খোঁজ আমরা পাচ্ছি না, কিন্তু শিল্পী সমিতি থেকে তার সন্ধান বের করার মতো শক্ত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কমিটি থেকে বলা হচ্ছে যে, তারা অপুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে- এটা ফলপ্রসূ হবে কবে? যদি তারা অপুর সন্ধান বের করতে না পারেন, তবে তার এভাবে নিরুদ্দেশ হওয়ায় বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?’
একে তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি লাইফ সাপোর্টে, তারপর যদি এভাবে অপুর মতো আশার প্রদীপগুলো নিভে যায় তবে চলচ্চিত্র শিল্প আরো বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন আট শতাধিক ছবির এই অভিনেতা।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেতা অপুর সন্ধান দিতে বললেন শিল্পী সমিতির সভাপতি ও চিত্রনায়ক শাকিব খানকে। মিশা বলেন, ‘চলচ্চিত্রে অপুর সঙ্গে শাকিবের বোঝাপড়া সবচেয়ে বেশি ভালো ছিল। এমনকি আমি যতদূর জানি অপু কোন ছবিতে কাজ করবেন আর কোনটাতে করবেন না সেটাও চূড়ান্ত করতেন শাকিব। পারিশ্রমিক লেনদেনও হতো শাকিবের হাত দিয়ে। তার মানে চলচ্চিত্রে অপুর অভিভাবক শাকিব! তাহলে শাকিবের উচিত অপু কোথায় আছে সেটার সঠিক সন্ধান দেয়া।’
এর আগেও অপু একবার আড়ালে গিয়েছিলেন। তারপর নতুন মোড়কে আবারো চলচ্চিত্রে ফিরেছিলেন। কিন্তু মিশা মনে করেন এবার তেমনটা হচ্ছে না, জল আরো বেশি দূর গড়িয়েছে। তিনি বললেন, ‘আমি যতদূর জানি সেসময় অপু কিছুটা মুটিয়ে গিয়েছিল। তার হাতে ছবি ছিল না। তাই শরীর ফিট করে আবার চলচ্চিত্রে ফিরেছিলেন। আর সেসময় অপুকে ফোন করলে পাওয়া যেত এবং আমি জানতাম যে সে তার রাজধানীর নিকেতনের বাসায় ছিলো। কিন্তু এবার তো পুরো হিতে বিপরীত হয়েছে।’
মিশা বলেন, ‘এখন তার রাজধানীর নিকেতনের বাসা এবং গ্রামের বাড়ি বগুড়াতেও নেই। তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি শুনলাম তার মালিকানায় নিকেতনের ২ নম্বর সড়কে একটি জিম খুলেছিল, সেটিও গত এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ। তার মানে একেবারেই হাওয়া হয়ে গেল অপু?’
সবশেষ মিশা বলেন, ‘অপু আবারো আগের মতো চলচ্চিত্রে ফিরে আসুক। আমরা আগের মতো একসঙ্গে কাজ করতে চাই। তাছাড়া ফিল্মের উন্নতির জন্য অপুর এখনো অনেক কিছুই দেয়ার আছে। একইসঙ্গে আমি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি ৫০টিরও বেশি ব্যবসাসফল ছবির নায়িকা অপুকে আবারো চলচ্চিত্রে ফিরে আসতে যেন সহযোগিতা এবং উৎসাহিত করে।’