১ হাজার শয্যা বিশেষায়িত হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন কাল

১ হাজার শয্যা বিশেষায়িত হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন কাল

BSMMU_Logo_2ঢাকা, ১৬ আগস্ট, ২০১৬ : বাংলাদেশ-কোরিয়ার যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এ ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতালের নির্মাণ কাজ আগামীকাল শুরু হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ বিএসএমএমইউ’র শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আগামীকাল বেলা সাড়ে ১২টায় নির্মাণ কাজ এবং কনসালটেন্সি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. আবদুল মান্নান এবং বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার এ্যামবাসাডর অ্যান সং ডু।
এক্সিকিউটিভ কমিটি অব দ্যা ন্যাশনাল ইকনমিক কাউন্সিল (একনেক)-এর এক সভায় এবছর ২ ফেব্রুয়ারি “সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল অব বিএসএমএমইউ” প্রকল্পের জন্য ১,৩৬৬ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এ এইচ এম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “এ প্রকল্পের মোট ব্যায়ের ২,৪৭৭ কোটি টাকা সরকারি তহবিল, ১৭৩.৯৩ কোটি টাকা হাসপাতালের আয় থেকে এবং ২,২০৭ কোটি টাকা প্রকল্প থেকে ব্যয় করা হবে।”
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, দেশে উন্নততর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, চিকিৎসকদের জন্য অত্যাধুনিক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা, বায়োমেডিকেল রিসার্চ এবং জনগণের জন্য উচ্চমানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা।
এখানে সব ধরনের গবেষণার উপযুক্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। বর্তমানে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিদেশে যেতে হয়, এই হাসপাতালটি নির্মিত হলে দেশেই সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্ভব হবে। এ হাসপাতাল শুধু রোগিদের উন্নত চিকিৎসা সেবাই নিশ্চিত করবে না। এর মাধ্যমে দেশে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নততর গবেষণার সুযোগও সৃষ্টি হবে।
এই প্রকল্পের অধীনে ১৩ তলা বিশিষ্ট আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সমৃদ্ধ হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে।
বিএসএমএমইউ ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। কোরিয়ান ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) এ প্রকল্প বাস্তবায়নে শতকরা ০.০১ হার সুদে ১,০৪৭ কোটি টাকা ঋণ দেবে। ৪০ বছরে এই ঋণ শোধ করতে হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বিএসএমএমইউ’র বিশেষায়িত এই হাসপাতালে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি গ্যাস্ট্রো এনটারোলজি এ্যান্ড হেপাটোবিলিয়ারি সেন্টার, চাইল্ড এ্যান্ড মাদার হেলথ কেয়ার সেন্টার, কারডিও এ্যান্ড সেরিব্রো ভাসকুলার সেন্টার, কিডনি ডিসিজেস সেন্টার, আইসিইউ এ্যান্ড সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টও স্থাপন করা হবে।
বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্র্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বাসসকে বলেন, এটি এমন একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল হবে যা একটি ‘পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র’ হিসেবেও কাজ করবে। বাংলাদেশে এধরনের হাসপাতাল এটিই প্রথম, যা বাংলাদেশ সরকার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে।
তিনি বলেন, রাজধানীর শাহবাগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পেছনে সরকারি ১২ বিঘা জমির ওপরে বিশেষায়িত এই হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কোরিয়ান সরকারের পক্ষে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারকে ১০০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। এই হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কোরিয়া যে ঋণ দেবে তা শতকরা .৭ টাকা সুদে ৪০ বছরে শোধ করতে হবে। হাসপাতালের আয় ও সরকারের তহবিল থেকে যৌথভাবে এই ঋণ পরিশোধ করা হবে।
এই বিশেষায়িত হাসপাতালে ১৮টি বিশেষায়িত ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং গবেষণা করা হবে। এগুলো হলোÑ লিভার, গল ব্লাডার ও প্যানক্রিস সেন্টার, অরগান ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার, ক্যানসার সেন্টার, ম্যাটারনাল এবং চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ডেন্টাল সেন্টার, কারডিওভাসকুলার/নিউরোসার্জারি সেন্টার, কমিউনিকেবল ডিজিজ সেন্টার, এনড্রোক্রিনোলজি ডায়াবেটিস সেন্টার, গ্যাসট্রোএনটারোলজি সেন্টার, রেসপিরেটরি সেন্টার, জেরিআট্রিক (বয়স্কদের চিকিৎসা) সেন্টার, জয়েন্ট/স্পাইন কর্ড সেন্টার, হার্ট সেন্টার, বার্ণ ইনজুরি সেন্টার, হেলথ স্ক্রিনিং সেন্টার, ইমারজেন্সি মেডিকেল সেন্টার, এমবুলেটরি সার্জারি সেন্টার এবং কিডনি মেশিন সেন্টার (হিমোডায়ালিসিস সেন্টার)।

অন্যান্য বাংলাদেশ