সরকার দেশের প্রাকৃতিক রতœ মুক্তা চাষে বৃহৎ আকারের বাণিজ্যিক খামারের উদ্যোগ নেয়ায় অচিরেই বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের তালিকায় মুক্তা একটি নতুন রফতানি পণ্য হয়ে উঠছে।
মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনিসুর রহমান বলেন, মানসম্মত মুক্তা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত দেশ ভিয়েতনাম থেকে ঝিনুক এনে উচ্চমানের মুক্তা উৎপাদনে আমরা ইতোমধ্যেই ৪২৪ বিঘা জমি ক্রয় করেছি।
রহমান বলেন, দেশ জুড়ে খাল, পুকুর, হাওর ও নদীগুলোসহ জলাশয়ে কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা চাষ করতে পারে।
মুক্তা চাষে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল এ বছরের গত ১৫ থেকে ২০ মার্চ ভিয়েতনাম সফর করে এসেছেন।
সফরকালে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ভিয়েতনামের কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী কাওদুচ পাথের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন।
ভিয়েতনামের মন্ত্রী মুক্তা চাষে সহযোগিতা দিতে কারিগরি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি উন্নতমানের ঝিনুক সরবরাহের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) চেয়ারম্যান ইয়াহহিয়া মাহমুদ বলেন, ‘ভিয়েতনাম অনেক বছর ধরে স্বাদু পানিতে ঝিনুক থেকে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা উৎপাদন করছে। বড় আকারের ওই ঝিনুক আমরা এখানে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ভিয়েতনাম থেকে কিনে আনা ঝিনুকগুলো এখন ময়মনসিংহে একটি হ্যাচারিতে ব্রিডিং পর্যায়ে রয়েছে।
এরআগে ২০১২ সালে বাংলাদেশকে মুক্তা চাষে ভিয়েতনামের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়ার দুই দেশ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে।
চীন, জাপান, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও ভারতের মুক্তা চাষের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরআগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে মুক্তা চাষের উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিএফআরআই টেকসই প্রযুক্তি ও মুক্ত চাষ প্রক্রিয়া নির্ধারণে ২০১২ সারের জুলাইয়ে ৫ বছর মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৫৬২ কোটি টাকার এ প্রকল্প শেষ হবে ২০১৭ সালের জুনে।
বিএফআরআই দেশব্যাপী জরিপ পরিচালনা করেছে এচং স্বাদু পানিতে ৫ প্রজাতির ঝিনুক চিহ্নিত করেছে এর মধ্যে দুইটি উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ঝিনুক।