পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন কোনো দেশ বা জাতির একার সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এ পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উন্নত, উন্নয়নশীল এবং দরিদ্র কোনো দেশই বাদ যাবে না।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ যখন বলবে উন্নয়নকে ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না তখন উন্নত দেশও একই কথা বলবে। এভাবে সমস্যার সমাধান হবে না। অনেকে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের কথা বলে বিভক্তি করতে চায়। এটিও সঠিক চিন্তা নয়। একইভাবে বৈদেশিক অর্থায়নে জলবায়ু সমস্যার সমাধানের চিন্তাও সঠিক নয়। মূলত সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে সমাধানের পথে হাঁটতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘ইমপ্লিমেশন অব ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (আইএনডিসি)’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, সবাইকে একসঙ্গে দায়িত্ব নিতে হবে। কাউকে দোষারোপ করা নয় বরং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আমরা পৃথিবীকে বাঁচাতে পারি। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি একটি সিরিয়াস ইস্যু। তিনি বলেন, প্যারিস সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সব দেশ একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শিল্প উদ্যোক্তাদেরও এব্যাপারে সচেতন হতে হবে। এসব দেশেও জীনযাত্রার মান আগের চেয়ে বেড়েছে। বিশ্ব নেতাদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহবান জানান তিনি।
পরিবেশ ও বন সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও এর সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর দিকে আমরা নজর দিয়েছি। জ্বালানি, পরিবহন ও শিল্প খাতে এই কার্বন নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ গত সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন জাতিসংঘে জমা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত ক্ষতি কিভাবে কমানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। কেননা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি ড. নুরুল কাদির ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। কর্মশালায় আইএনডিসি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন রিকার্ডো এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্টের সিনিয়র এনার্জি এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ কনসালটেন্ট জেমস হেরিস।
কর্মশালায় বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ পরিবর্তন ঝুঁকির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর দিকে নজর দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের গড় জিডিপির ২ ভাগের মতো ক্ষতি হবে।