দেশের প্রবৃদ্ধি এ বছরে ৭ শতাংশের বেশি : অর্থমন্ত্রী

দেশের প্রবৃদ্ধি এ বছরে ৭ শতাংশের বেশি : অর্থমন্ত্রী

fmঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, ‘পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রাথমিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, দেশের প্রবৃদ্ধি এ বছরে ৭ শতাংশের সামান্য বেশি।’

তিনি বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে একথা বলেন।

বিবিএস (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো) এর চূড়ান্ত হিসেব মতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির অগ্রগতি সমতুল্য দেশগুলোর একই সময়ে প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি। চলতি অর্থবছরে আমরা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম ৭ দশমিক শূন্য শতাংশ। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ সকলেই প্রক্ষেপণ করেছে যে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। আইএমএফ বলেছে তা হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

মন্ত্রী তার বিশ্লষণে দেখান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন কর রাজস্ব আদায় ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি ব্যয় ৭৬ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা থেকে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ৬২২ কোটি টাকা।

তাছাড়া, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিগত অর্থবছরের প্রথমার্ধের ১৭ হাজার ৮ কোটি টাকা থেকে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। আইএমইডি’র তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয় হয়েছে ২২ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা, যা বার্ষিক মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক শূন্য শতাংশ।

‘আমদানি-রপ্তানি আয় বেড়েছে’ উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ‘বিগত অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের ১৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে রপ্তানি আয় ১৬ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে সামগ্রিকভাবে আমদানি ঋণপত্র খোলা ১ শতাংশ হ্রাস পেলেও মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খোলার পরিমাণ বেড়েছে যথাক্রমে ২৯ দশমিক শূন্য ও ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। আমদানি ঋণপত্র নিষ্পত্তির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।’

বিশ্লষণে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্যক্তিখাতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রবাস নিয়োগের সংখ্যা ২ দশমিক ২ লাখ থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ দশমিক ১ লাখে দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ছিল প্রায় ২২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২৩ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।’

সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ প্রবাহ ৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১ হাজার ১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর সময়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশে নেমে এসেছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ)। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরিত হয়েছে ৭৭ হাজার ২৩০ কোটি টাকা, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি এবং বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ। রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ না হওয়ায় রাজস্ব আদায়ের গতি বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কারণ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ জরুরি।’
খবর- বাসস।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য