দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের মামলায় প্রসিকিউশন যে ৪৬ জনের তদন্তকালীন জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে নথিভুক্ত করার আবেদন করেছিল, তার মধ্যে ১৫ জনের আবেদন গ্রহণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার এক আদেশে বলে, প্রসিকিউশন তাদের ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনকে ট্রাইব্যুনালে আনা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ বলে প্রমাণ করতে পেরেছে। এ কারণে জেরা না করেই তাদের তদন্তকালীন জবানবন্দি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য হিসাবে নেওয়া হলো।
তবে এই সাক্ষীদের যে জেরা হয়নি, তা মনে রেখেই আদালত বিষয়টি আমলে নেবে বলে উল্লেখ করেন বিচারক। তিনি বাকি ৩১ জন সাক্ষীর বিষয়ে প্রসিকিউশনের আবেদন নাকচ করে দেন।
প্রসিকিউটর হায়দার আলী গত মঙ্গলবার এক আবেদনে বলেন, এ মামলার ১৯ জন চাক্ষুষ সাক্ষীকে হাজির করা দুরূহ, ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। এছাড়া আসামির পক্ষে একটি গোষ্ঠী পিরোজপুরে সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া তাদের জবানবন্দি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করা হোক।
এছাড়া ২৭ জন গৌণ সাক্ষীর ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান তিনি।
বুধবার এর বিরোধিতা করে সাঈদীর আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রসিকিউশন তার মক্কেলের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অভিযোগ তুলে’ এখন সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ হচ্ছে। সাক্ষীদের জেরা করতে না পারলে আসামিপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ বিষয়ে আদেশের পর বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল জানায়, আগামী ৮ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে জেরা শুরু করবে আসামিপক্ষ।
গতবছরের ৩ অক্টোবর এই ট্রাইব্যুনালে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীকে। ২০১১ সালের ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
এখন পর্যন্ত ২৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে এ মামলায়।
সাঈদী ছাড়াও জামায়াতের পাঁচ শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার রয়েছেন। তারা হলেন- দলের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্ল¬¬া।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় এই পর্যন্ত দুই বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আটক থাকলেও জিয়াউর রহমান আমলের মন্ত্রী আব্দুল আলীম শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন।