আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ওসামা বিন লাদেন চার সন্তানের পিতা হন। ওসামার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী ওই চার সন্তানের মা পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি তদন্তকারীদের এক প্রতিবেদনের সূত্রে শনিবার বিবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে।
ওসামার এই ইয়েমেনি স্ত্রীর নাম আমল আব্দুলফাত্তাহ। ২০১১ সালের মে মাসে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ওসামার গোপন আস্তানায় মার্কিন বাহিনীর অভিযানের সময় আমলকে আটক করা হয়।
ওই অভিযানে বিশ্বের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ব্যক্তি আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হন।
আমল জানিয়েছেন, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জন্ম নেওয়া চার সন্তানের মধ্যে দুইজনের জন্ম পাকিস্তানের সরকারি হাসপাতালে। তবে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি হাসপাতালে ছিলেন বলে জানান।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরো জানান, একজন ‘পবিত্র যোদ্ধা’ বা মুজাহিদিনের স্ত্রী হওয়ার আগ্রহের কারণেই তিনি ওসামার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
আমলের বক্তব্য অনুযায়ী তিনি ২০০০ সালে আকাশপথে পাকিস্তানে আসেন, তারপর স্থলপথে আফগানিস্তানে যান। সেখানে ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার আগেই ওসামার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তখন ওসামার আরো তিনজন স্ত্রী ছিল।
টুইন টাওয়ারে হামলার পরপরই তাদের নতুন সংসার এলোমেলো হয়ে যায় বলে তিনি তদন্তকারীদের জানান। তারপর আমল পাকিস্তানের করাচিতে চলে আসেন। এর কিছুদিন পর পেশোয়ারে আবার বিন লাদেনের সঙ্গে তার দেখা হয়।
এরপর তারা পাকিস্তানের সোয়াত ভ্যালিতে চলে যান। সেখানে দুইটি বাড়িতে তারা বসবাস করেন।
২০০৫ সালে অ্যাবোটাবাদে আসার আগে তারা আরো একবার জায়গা পরিবর্তন করেন বলে জানান আমল।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার জন্য ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করা হয়। ওই হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়।
এরপর ওসামাকে জীবিত অথবা মৃত ধরে দেওয়ার জন্য ২৫ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোর সেনারা হন্যে হয়ে ওসামাকে খুঁজতে থাকে।
তাকে খুঁজে বেড়ানোর ওই সময়টিতে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের কর্মকর্তারা ধারণা করতেন, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের দুর্গম জায়গার কোনো গুহায় লুকিয়ে আছেন ওসামা বিন লাদেন।