আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। গত মঙ্গলবার তিনি নিউইয়র্কে পৌঁছেন।
বুধবার দেশের নানা বিষয়ে তিনি বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন। লন্ডনে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের আরেক বর্ষীয়ান নেতা আব্দুর রাজ্জাককে নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি শিহাবদ্দিন কিসলু।
সাক্ষাৎকারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনার করতে বিএনপির জন্য এখনও দরজা খোলা আছে। সরকারকে ভয় দেখানোর জন্য তথাকথিত রোডমার্চ বিএনপির জন্য কোনও ফল বয়ে আনবে না। প্রয়োজন মনে করলে বিএনপি সংসদে এসে এ বিষয়ে কথা বলতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আলোচনার দরজা এখনও খোলা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, প্রয়োজনে সংবিধানও সংশোধন করা যাবে।’
তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা আরও উন্নত করা বা কিছু অংশ সংশোধন- এসব কিছু সংসদেই আলোচনা করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এখনও দু’ বছর সময় আছে। কিন্তু বিএনপির ভারতবিরোধী রাজনীতি তো কোনও সমাধান নয়।‘
সেইসঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সময় মতোই নির্বাচন হবে।’
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু’ বছরের কথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ‘এটা প্রমাণ করতে পারেনি যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারই শেষ সমাধান। বরং এটি একটি এমার্জেন্সি সরকারের জন্ম দিয়েছিল। আরেকটি সামরিক সরকারের হাতে আমরা প্রায় বন্দি হয়ে পড়েছিলাম।’
স্থিতিশীলতা, সম্প্রীতির রাজনীতি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং রাজনীতিতে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে রাজনীতি থেকে সংঘাত এবং সহিংসতা দূর করাই এখন বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় সুরঞ্জিত সংসদকে জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত করতে বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানান।
যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে তিনি বলেন, রাজাকারদের বিচারের কোনও বিকল্প সরকারের সামনে নেই।
ভারতের সঙ্গে তিস্তা পানিবন্টন চুক্তির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তিস্তা চুক্তি অবশ্যই হবে। তবে ৪০ বছরের সমস্যা একদিনে সমাধান হবে, এমন আশা করাটা অবাস্তব।’
সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করলেও তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বাংলাদেশ এখন একটি অসীম সম্ভাবনার দেশ এবং বর্তমানে বিশ্বের সামনে একটি দৃষ্টান্ত। যা এর আগে কেউ উল্লেখ করেনি।’
লন্ডনে চিকিৎসাধীন আব্দুর রাজ্জাকের আরোগ্য কামনা করে তিনি বলেন, ‘তিনি একজন জাতীয় বীর। বাংলাদেশের মানুষ তার পাশে থাকবে।’
তিনি জানান, আব্দুর রাজ্জাকের অবস্থা এখন ভালোর দিকে। তিনি এখন হাঁটতে পারছেন। তার স্ত্রী সেবা শুশ্রুষা করছেন। তার লিভার প্রতিস্থাপন এবং কিডনির অপারেশনের ব্যাপারে চিকিৎসকদের একটি বোর্ড আগামী ২২ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নেবে।
আব্দুর রাজ্জাক খুব শিগগির সুস্থ হয়ে দেশের মানুষের সেবার জন্য আবার জনগণের কাছে ফিরে আসবেন বলেও আশা করেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।