নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়লো ৮ হাজার কোটি টাকা। নিজস্ব অর্থায়নে ২০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণে কাজ শুরু হয়। নতুন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ালো ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে নতুন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নদী শাসন ও মূল কাঠামোর দুই খাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হওয়ার কারণেই প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সড়ক পথে রাজধানীসহ মধ্যাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করতে পদ্মা নদীর উপর ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ গত ১২ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা যায়, ২০১৮ সালে যাতায়াতের লক্ষ্য নিয়ে এরই মধ্যে প্রকল্পের ২৭ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে মূল সেতুর পাইলিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল। এখন ব্যয় ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়ছে।
মূল সেতুর জন্য চায়না মেজর ব্রিজের সঙ্গে প্রকল্পের প্রথমবারের হিসাবের চেয়ে বেশি দরে চুক্তি করতে হয়েছে। একইসঙ্গে নদী শাসনে চীনের আরেক কোম্পানি সিনোহাইড্রোর সঙ্গেও বেশি দরে চুক্তি করতে হয়েছে। এটি ইতোমধ্যে পারচেজ কমিটি থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় সেতুর মূল কাঠামো তৈরি করছে। নদী শাসনে সিনোহাইড্রো করপোরেশনকে দিতে হচ্ছে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ২০১১ সালের প্রথম প্রস্তাবে এ দুই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল যথাক্রমে ৯ হাজার ১৭২ কোটি ১৭ লাখ এবং ৫ হাজার ৩৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
জাজিরা ও মাওয়া সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এলাকা নির্মাণেও ব্যয় বাড়ছে। এ তিন অংশে ব্যয় হচ্ছে যথাক্রমে ১ হাজার ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ, ১৯৩ কোটি ৪০ লাখ ও ২০৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। তিন অংশের কাজই যৌথভাবে করছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড ও মালয়েশিয়ার এইচসিএম কনস্ট্রাকশন।
২০০৭ সালে একনেক ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। পরে নকশা পরিবর্তন হয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যায়। ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সংশোধিক প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়।