গাইবান্ধা জেলার ৩টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ তিনটি পৌরসভা হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ ও গাইবান্ধা। আজ বুধবার এই ৩ পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ১৯, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৪৯ ও কাউন্সিলর পদে ১৩৮ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিন পৌরসভায় মোট ভোটার হচ্ছে ৮৬ হাজার ৫শ’ ২৯ জন। এবার পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪২ হাজার ৪শ’ ৭৪ জন ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৫৫ জন বলে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে সবখানেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
কুয়াশা কাটতে না কাটতেই সকাল ৭টার আগেই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে ভিড় করতে শুরু করেন। ভোট শুরুর পর দেখা যায় তাদের মধে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশী। গাইবান্ধা পৌরসভার উত্তরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার অধ্যাপক আবু সাইদ মন্ডল জানান, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে ভোটশুরুর পরপরই গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী ৪টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি’র অভিযোগ এনেছেন।
গাইবান্ধা পৌরসভা
এই পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন। তারা হলেন বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী শামছুল আলম (মোবাইল ফোন), আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদ (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী আনওয়ার উল সারওয়ার সাহিব (রেল ইঞ্জিন), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরদার রোকনুজ্জামান (চামচ), জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম ফেরদৌস আলম (নারকেল গাছ)। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ২০ ও কাউন্সিলর পদে ৭২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গাইবান্ধা পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৬ হাজার ৩শ’ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৬শ’ ৬১ ও নারী ভোটার ২৩ হাজার ৭শ’ ২০ জন।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভায় ৪ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র আতাউর রহমান সরকার (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ফারুক আহমেদ (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির আখতার হোসেন জুয়েল (লাঙ্গল), ওয়ার্কার্স পার্টির আব্দুল মতিন মোল্লা (হাতুড়ি)। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১৬ ও কাউন্সিলর ৩৬ জন। মোট ভোটার হচ্ছে ২৭ হাজার ৬শ’ ৪৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৬শ’ ১৮ ও নারী ভোটার ১৪ হাজার ২৬।
সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা
এই পৌরসভায় মেয়র পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আজাদুল করিম নিপু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মশিউর রহমান সরকার (লাঙ্গল), জাতীয় পার্টির জেপি প্রার্থী মশিয়ার রহমান (বাই সাইকেল), জাসদের প্রার্থী শাহাদত হোসেন (মশাল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এটিএম মাসুদুল ইসলাম চঞ্চল (মোবাইল ফোন), আ’লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহিন আহমেদ সবুজ (জগ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেবাশীষ কুমার সাহা (চামচ)। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১৩ জন ও কাউন্সিলর পদে ৩০ জন প্রার্থী রয়েছেন। মোট ভোটার ১২ হাজার ৫শ’ ৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১শ’ ৯৫ জন, নারী ভোটার ৬ হাজার ৩শ’ ৯ জন। গাইবান্ধার তিন পৌরসভার ৫২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪৭টি ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা পৌরসভায় ২৯টি, সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় ৪টি ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভায় ১৪টি। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে। গাইবান্ধার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শামছুল আজম জানান, গাইবান্ধার ৩ পৗরসভার নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৯ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য আছেন।। এছাড়া তিন কেন্দ্র মিলে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন।। এরই মধ্যে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে তিন পৌর এলাকায় বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে।