‘মুক্তিযুদ্ধ অস্বীকার অপরাধ আইন’ তৈরির দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সন্তানদের সংগঠন প্রজম্ম ’৭১। সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে এ দাবি জানানো হয়।
এসময় বক্তারা সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তব্যের নিন্দা জানান।
মানবন্ধনে নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও আজ মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নির্বোধ বলা হচ্ছে। এর চেয়ে নিলর্জ্জতা আর মূর্খতা হয় না। আমাদের দেশের শহীদ বুদ্ধিজীবীরা শুধু মুক্তিযুদ্ধেই ভুমিকা পালন করেননি। তারা ১৯৫২ সাল থেকেই আমাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে এসেছেন।
তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা গণনার চাইতে বরং আপনি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্য কতজন মারা গেছেন সেই হিসাব করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী আলিম চৌধুরীর মেয়ে নুজাত চেীধুরী বলেন, একাত্তরে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা নির্লজ্জের মত পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করে। পাকিস্তানিদের এ ধরণের পরাজয় না পাকিস্তান যেমন ভুলতে পারছে না তেমনি এ দেশে তাদের দোসর জামায়াত-বিএনপিও ভুলতে পারছে না। আর এজন্যই তারা আমাদের প্রিয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে আঘাত করছে।
শহীদুল্লাহ কায়সারের কন্যা ও অভিনেত্রী শমী কায়সার মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের অবদানকে উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে যারা এ ধরণের বক্তব্য দেয় তারা হলেন দেশবিরোধী, সংবিধান বিরোধী ও গণবিরোধী। তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।
আসিফ মুনির বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে যারা এ ধরণের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মামলা করা উচিত। আর এটা যদি করা না হয় তাহলে আমরা রাষ্ট্রকেই ধিক্কার জানাবো।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জহির রায়হানের ছেলে অনল রায়হান, জোত্যির্ময় গুহঠাকুরতার মেয়ে মেঘনা গুহঠাকুরতা, সিরাজউদ্দিনের ছেলে জাহিদ রেজা নূর, অধ্যাপক রাশেদুল হাসানের মেয়ে রুকাইয়া হাসান প্রমুখ।