পৌরসভা নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
রোববার পরিপত্র বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ওই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে বহিরাগতদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র সন্ত্রাসী ও অপরাধী ধরতে ২৮ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করবে আইনশৃঙ্খাবাহিনী। একইসঙ্গে বৈধ অস্ত্রবহন ও প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিপত্র থেকে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে সন্ত্রাসী ও অপরাধী ধরতে ২৮ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করবে আইনশৃঙ্খাবাহিনী। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, র্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সমন্বয়ে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে। প্রতিটি পৌরসভায় একটি করে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- দুই হাজার ২৯ জন সস্ত্রাসী নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৫৬১, বিএনপির ১১২১ জন। বাকিরাও অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের। তাদের ধরতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনে র্যাবের ৮১টি টিম এবং ২২৯টি পৌরসভায় ১০২ প্লাটুন বিজিবি এবং ৬ উপকুলীয় পৌরভায় কোস্টগার্ডের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া মাঠে থাকছে ১ হাজার ২০৪ নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে মেটাল ডিটেক্টর
ইসি কর্মকর্তা বলছেন, অপরাধীরা যাতে কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারেন তার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভোটের আগমুহূর্তে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে বিশেষ দৃষ্টি রেখে প্রয়োজনে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করতে বলেছে ইসি।
দুই অঞ্চলে পুলিশের বিশেষ শাখার পক্ষ থেকে জঙ্গি হামলার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের কথা বৈঠকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে বিশেষ করে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিভিন্ন সমাবেশ, পথসভা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উপর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
বৈধ অস্ত্রবহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ
সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী দুইদিন হতে ভোট গ্রহণের পরবর্তী চার দিন পর্যন্ত অর্থাৎ নির্বাচনের দিনসহ মোট ৭দিন যাতে অস্ত্রের লাইসেন্সেধারীরা অস্ত্রসহ চলাফেরা না করেন কিংবা অস্ত্রবহন ও প্রদর্শন না করেন, সে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে ২৩৩ পৌরসভায় একযোগে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে ৯৪৫ জনসহ মোট ১২ হাজার প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার ৫৮২টি কেন্দ্রে ৬১ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। এতে প্রায় ৭২ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।