সবাইকে চমকে দিয়ে আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার পথে পাকিস্তান সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
রাশিয়া সফর শেষে আফগানিস্তান হয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল মোদির। কিন্তু কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া আকস্মিকভাবে পাকিস্তানে যাত্রাবিরতি করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদির কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, শুক্রবার সকাল ১১টায় শরিফকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে লাহোরে যাওয়ার বিষয়টি স্থির হয়।
মোদির রাশিয়া ও আফগানিস্তান সফরের সময় যে অন্যরকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। ১৪ ডিসেম্বর প্রথম কেরল সফরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওই সফরের সময় কোচিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সাইরো-মালাবার চার্চের আর্চবিশপ কার্ডিনাল মার জর্জ অ্যালেনচেরি। মোদি সেসময় কার্ডিনালকে জানান, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির বাড়িতে আয়োজিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য টি-পার্টিতে যোগ দিতে পারবেন না। তার এই অপারগতার জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্ডিলানের কাছে খেদ ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ওই পার্টিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। এরপর ওই পার্টি ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ বড়দিনে তিনি দিল্লিতে থাকবেন না সেটি আগেই জানিয়ে দেন মোদি।
পাকিস্তানি চ্যানেল জিও টিভি-র প্রতিবেদন অনুসারে, মোদির সফর কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। কেননা এ সফরের বিষয়ে লাহোরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে গত বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। ভারত ও পাকিস্তানের হাতে গোনা কয়েকজন এই কর্মসূচি সম্পর্কে জানতেন।
এছাড়াও গত এক সপ্তাহ নয়াদিল্লি ছেড়ে দেশেই ছিলেন ভারতে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত আব্দুল বাসিত। কয়েকদিন ধরেই ভারতের বিরুদ্ধে বিবৃতি না দেয়ার জন্য পাকিস্তানের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন শরিফ। এসব কারণেই অনেকেই বলছেন, মোদির লাহোর সফর ছিল পূর্বনির্ধারিত।
মোদি এমন এক সময় প্রথম পাক সফর করলেন যখন গত কয়েকমাসের উত্তেজনা ও সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনার পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।