ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিক পাকিস্তান সফর করে দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার মোদির অপ্রত্যাশিত পাকিস্তান সফর ও পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হঠাৎ বৈঠককে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশ দুটির মাঝে দীর্ঘদিনের যে বৈরিতা চলে আসছে তা কমবে। খবর বিবিসির।
আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার পথে লাহোরে গিয়ে মোদি বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফের সঙ্গে। এমন এক সময়ে এ সফরের ঘটনা ঘটলো যখন আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ চরম আকারে পৌঁছেছে।
এর আগে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে এ ধরনের সাক্ষাতের ঘটনা ঘটলেও পাকিস্তানের জন্যে মোদির সর্বশেষ এই সফরের বাড়তি তাৎপর্য রয়েছে। পাকিস্তানের ‘দ্য ডন’ পত্রিকার সম্পাদক আশাহার রেহমান বলেন, এই ধরনের বৈঠক ১১ বছর পর হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন অটল বিহারী বাজপেয়ী লাহোরে গিয়েছিলেন।
রেহমান বলেন, আমরা আশা করছি এ সফর থেকে হয়তে বরফ গলতে শুরু করবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মধ্যে এর আগেও কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়েছে। সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে।
আশাহার রেহমান বলেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে ধরনের সমস্যা রয়েছে সেটি শুধু দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান হবে না। কারণ উভয় প্রধানমন্ত্রীর উপর তাদের নিজের দেশের ভেতরে নানা ধরনের চাপ রয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাসের একটি বড় কারণ আফগানিস্তান। লাহোরে যাওয়ার আগে কাবুলে দেয়া এক ভাষণে নরেন্দ্র মোদি আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তানকেই দায়ী করেন। মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর দুদেশের মধ্যে সন্দেহ আর অবিশ্বাস চরমে পৌঁছায়। এই অবিশ্বাস আর সন্দেহের পেছনে আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান ভারতীয় প্রভাবও একটা কারণ।
মোদি মাত্রই কাবুলে ভারতীয় সহায়তায় তৈরি এক নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করে দেশে ফিরেছেন। আফগানিস্তানে আরও বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্পে বিপুল সহায়তা দিচ্ছে ভারত। পাকিস্তান এ বিষয়টা মোটেই সুনজরে দেখছে না। আফগান সরকারের মতো ভারতেরও সন্দেহ, সেখানে তালেবান বিদ্রোহের অন্যতম মদতদাতা হচ্ছে পাকিস্তান।
ভারত মনে করে, আফগানিস্তানে তাদের যে প্রভাব সেটা খর্ব করতেই তালেবানকে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান। এই বৈঠকের মধ্যদিয়ে দুই বৈরী প্রতিবেশী অন্তত আলোচনার পথে ফিরে আসবে বলে রেহমান মনে করেন।