‘পরমাণু সন্ত্রাস বিশ্বের জন্য মারাত্মক হুমকি’

‘পরমাণু সন্ত্রাস বিশ্বের জন্য মারাত্মক হুমকি’

পরমাণু সন্ত্রাসকে গভীর হুমকি উল্লেখ করে বিশ্বের ক্রমবর্ধমান পরমাণু সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলায় নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘পরমাণু নিরাপত্তা’ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তারা এ মনোভাব ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক রাস্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মুং বাক। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিকো নোদাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৬০ রাষ্ট্রনেতা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মুং বাক তার বক্তব্যে বলেন, পরমাণু সন্ত্রাস বর্তমান বিশ্বের জন্য একটি গভীর হুমকি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই পরমাণু সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলা করতে হবে। বারাক ওবামা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এখনও বিশ্বে কিছু খারাপ খেলোয়াড় আছে যারা বিপজ্জনক পরমাণু সামগ্রী অবৈধভাবে মজুত ও ব্যবহার করছে।’

সম্মেলনে নিজ বক্তব্যে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিকো নোদা উত্তর কোরিয়াকে রকেট উৎক্ষেপণ কর্মসূচি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও তার বক্তব্যে পরমাণু সন্ত্রাসের হুমকি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেন।

সিউল সম্মেলনে আলোচনার অনেকখানি জুড়ে থাকে উত্তর কোরিয়ার প্রস্তাবিত দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণ পরিকল্পনা। এর আগে উত্তর কোরিয়া ঘোষণা করে তারা আগামী মাসে দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করবেন।

উত্তর কোরিয়ার এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানিয়ে বলে উত্তর কোরিয়ার যে কোনো রকেট উৎক্ষেপণ জাতিসংঘের প্রস্তাবনাকে লঙ্ঘন করবে।

সম্মেলনে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিও ছিল আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইরানের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত একটি প্রস্তাব আনতে বারাক ওবামা চীন ও রাশিয়া নেতাদের রাজি করাতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যম।

এর পাশাপাশি বৈঠকে বিশ্বনেতারা পরমাণু সন্ত্রাস প্রতিরোধ লড়াইয়ের বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে পরমাণু পদার্থ ও স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং পরমাণু সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিপজ্জনক পদার্থের অবৈধ চলাচল ও পাচার বন্ধে নজরদারি করা।

বিশ্বে বর্তমানে রাশিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র আছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের হাতে আছে প্রায় ১০ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র। এরপরই সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার আছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তাদের কাছে আছে আনুমানিক ৮ হাজার ৫শ’ অস্ত্র।

এর পাশাপাশি অপর পরমাণু অস্ত্রের শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে ফ্রান্সের আছে ৩শটি, চীনের ২৪০টি, যুক্তরাজ্যের ২২৫টি পরমাণু অস্ত্র।

এর পাশাপাশি উপমহাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারতের কাছে আনুমানিক ১শ’ পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে ধারণা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র ইসরায়েলের কাছে আছে প্রায় ৮০টি অস্ত্র। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার কাছে ১০টিরও কম পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে ধারণা করা হয়।

আন্তর্জাতিক