চলতি বছরে ইউরোপে ১০ লাখের বেশি অভিবাসী পৌঁছেছে বলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে। আইওএম বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় শরণার্থীর স্রোত এ বছর ইউরোপে প্রবেশ করেছে।
আইওএমের বরাত দিয়ে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলোতে ১০ লাখ পাঁচ হাজার ৫০৪ শরণার্থী প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে আট লাখ ১৬ হাজার ৭৫২ শরণার্থী গ্রিসের সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গেছে।
গত বছরের চেয়ে চার গুণ বেশি শরণার্থী ইউরোপে ঢুকেছে। এদের মধ্যে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী বেশি। সংঘাত ও নির্যাতনের শিকার আফগান, ইরাক এবং ইরিত্রিয়ার উল্লেখযোগ্য শরণার্থী রয়েছে। আইওএম সতর্ক করে দিয়ে বলছে, সামনের দিনগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের শরণার্থীদের ঢল সামলানো ইউরোপের জন্য বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা ইউরোপে পাড়ি জমানোর আশায় শুধুমাত্র তুরস্কে এখনো ২২ লাখ সিরীয় শরণার্থী বাস করছে। একই সঙ্গে সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ১১ লাখ নাগরিক লেবাননে রয়েছে। যেখানে জর্ডানে ছয় লাখ ৩৩ হাজার সিরিয়ান নাগরিক শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছে।
আইওএম বলছে, দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপে শরণার্থীরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোতে শরণার্থীরা এখনো কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। ২৪ বছর বয়সী সিরিয়ান শরণার্থী নেমার বলেন, জর্ডানে জীবন অত্যন্ত কঠিন। তিনি চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে গ্রিসের লেসবস দ্বীপে পৌঁছান।
নেমার বলেন, সেখানে (জর্ডানে) কোনো কাজ নেই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারি না। এখানে কোনো আশা নেই। তুরস্কেও একই অবস্থা; কাজ নেই, স্বপ্ন নেই।
লেসবস দ্বীপ ইউরোপে প্রবেশের প্রধান ফটক। চলতি বছরে ইউরোপে যেসব শরণার্থী প্রবেশ করেছে তার মধ্যে অর্ধেকই লেসবস দ্বীপ ব্যবহার করেছে। শরণার্থীদের বহনকারী ১৫টি নৌকা সোমবারও লেসবস দ্বীপে পৌঁছেছে। গ্রিসের এই দ্বীপ হয়ে ডিসেম্বরের প্রত্যেকদিন ইউরোপে ৩ হাজার ৩৩৮ শরণার্থী ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছে।