সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের পদবী ব্যবহার করে প্রচার-প্রচারণায় মৌখিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগানোসহ সব ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তাদের।
জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে চলমান আন্দোলনের পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন মোবাইল ফোনে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ নির্দেশনা দেন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া কয়েকজনকে নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তাই তাদের আপাতত পদ-পদবী ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই ব্যানার-ফেস্টুন ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া নেতাদেরও পদবী ব্যবহার করে ব্যানার-ফেস্টুন না দিতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘আগামী ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনেরও কাজ চলছে। এসব নিয়ে আমরা এখন ব্যস্ত আছি। এছাড়া ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সিলেট যাবেন। এরপর আমরা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষকে নিয়ে বসে একটি সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছবে।’
তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আহমদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী এমন নিষেধাজ্ঞার কথা অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, একটি পক্ষ কমিটি স্থগিতের প্রচারণা চালাচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ পাগলের প্রলাপ। এসব ভুয়া বানোয়াট তথ্যে বিভ্রান্ত না হবার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। যদি কখনো কমিটি বিলুপ্ত বা স্থগিত করা হয় তাহলে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক লিখিতভাবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদনের পর থেকেই কমিটিতে পদ নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকা নেতারা ও পদবঞ্চিত নেতারা এক হয়ে এ কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন এবং এ কমিটিতে অছাত্র, বিবাহিত ও ছাত্রদল, শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারীরা স্থান পেয়েছেন দাবি করে কমিটি বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আন্দোলনকারী নেতাদের ডেকে পাঠান।
গত রোববার রাতে এস এম জাকির হোসাইনের ঢাকাস্থ পরীবাগের বাসায় বৈঠকে বসেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতারা। এ বৈঠকে উপস্থিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বৈঠক থেকেই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে মোবাইল ফোনে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদেরকে সাংগঠনিক পরিচয়, পোস্টার-ব্যানার না ব্যবহারের নির্দেশনা দেন। ৭ জানুয়ারির আগে তাদের হাতে কমিটির চিঠি না দিতেও নির্দেশ দেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকে জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সহ-সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাশ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনক পাল অরূপ, ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান জুয়েল, রাসেল আহমদ প্রমুখ।