এখনই ক্রিকেটেক বিদায় জানানোর কোনো ইচ্ছা নেই, ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকারের।
রোববার মুম্বইয়ে একটি সংস্থার পক্ষ থেকে শচীনকে শততম সেঞ্চুরির জন্য সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরে ফের একবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তিনি।
টেন্ডুলকার বলেন, ‘এখনই অবসর নয়। যতদিন ক্রিকেটের প্রতি আমার আগ্রহ থাকবে, ততদিন খেলা চালিয়ে যাব। যেদিন মনে করব মাঠে আমি একশ শতাংশ দিতে পারছি না, খেলার প্রতি আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি, তখনই ক্রিকেটকে বিদায় জানাবার সিদ্ধান্ত নেব’।
তিনি বলেন, ‘অবসর নেওয়ার জন্য কারও পরামর্শের প্রয়োজন নেই। অবসরের সিদ্ধান্ত আমি নিজেই নিতে পারব। আমাকে নতুন করে কিছু প্রমাণ করতে হবে না। যাদের একটাও সেঞ্চুরি নেই তারাও উপদেশ দিতে শুরু করেছিল। একটা ম্যাচে ১০০ সেঞ্চুরি আসেনি। ক্রিকেটের প্রতি আমার আবেগ আগের মতই রয়েছ।’
গত এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতরান পাননি শচীন। ৯৯ তে থমকে থেকেছেন বহুদিন। যা তাকেও পীড়া দিয়েছে বলে জানান এদিন।
এক প্রশ্নের উত্তরে শচীন বলেন, ‘আমি নিজেও অবাক হয়ে গিয়েছি কেন এত দেরি হচ্ছে (শতকের শতক)। শেষে যখন শততম সেঞ্চুরিতে পৌঁছলাম, তখন ব্যাটের দিকে একবার তাকালাম। পরে আকাশের দিকে। ঈশ্বরের কাছে জানতে চাইলাম, এই একটি শতক পেতে কেন এত অপেক্ষা করতে হলো আমায়? আমার কি কোনো ভুল হয়েছে’?
শততম সেঞ্চুরির যে হাইপ উঠেছিল, সেজন্য সংবাদমাধ্যমকেই দায়ী করেছেন টেন্ডুলকার। বলেন, ‘শততম সেঞ্চুরির পরিকল্পনা আমার ছিল না। এটা সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা। বিশ্বকাপের পর যেখানেই গিয়েছি, সবাই ওই একটি সেঞ্চুরির জন্য আবদার করেছে। ফলে কিছুটা চাপ হয়ত আমার মধ্যেও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সব সময় সেঞ্চুরি নিজের হাতে থাকে না। অনেক সময় ভাগ্যের প্রয়োজন পড়ে।’
সেঞ্চুরিম্যান মনে করে দিলেন, বিশ্বকাপের পর এমন ৫টা ইনিংস খেলেছেন যেখানে তিনি সেঞ্চুরি পেতে পারতেন। তবে সাধারণ মানুষ যেভাবে প্রার্থনা করেছে, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শচীন।
মজা করে শচীন বললেন, ‘এবার থেকে নতুন কোনো টার্গেট আমার কাছে রইল না। খোলা মনে খেলতে পারব।’
মানুষ হিসেবে চির জীবনই বাবাকে আদর্শ মেনে এসেছেন বলে জানান তিনি। তেমনি ক্রিকেট জীবনে সেরা প্রাপ্তি কি? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডন ব্র্যাডম্যান আমাকে নিজের সেরা টেস্ট একাদশে জায়গা দিয়েছেন। এটাই আমার কাছে সেরা পুরস্কার।’
তেমনি যতই টি-টোয়েন্টি ও একদিনের ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা চলতে থাকুক না কেন, টেস্ট ক্রিকেটকেই সর্বোচ্চ মাঠকাঠি বলে বর্ণনা করেন সেঞ্চুরিম্যান টেন্ডুলকার।