দিল্লির আলোচিত নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত কিশোরের মুক্তির বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ দেন। রোববার একটি সংশোধন কেন্দ্র থেকে ছাড়া পেয়েছে ওই ধর্ষক। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি।
ওই কিশোরের মুক্তির আগে নির্ভয়ার বাবা-মা বলছেন, আমরা হেরে গেছি, জিতে গেছে অপরাধ। ওই ধর্ষককে ছেড়ে দেয়া হলেও তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারীতে রাখা হবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। তবে সবার ন্যায় সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না।
দেশটির আইনে অপরাধ ঘটানোর সময়ে কারো বয়স ১৮ বছরের কম হলে তাকে তিন বছরের বেশি কারাদণ্ড দেয়ার বিধান নেই। এদের বিচার কিশোর আইনে হয় একই সঙ্গে তাকে আটকে রাখাও হবে কিশোর সংশোধনাগারে। নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সময় ওই কিশোরের বয়স ছিল ১৮ বছরের কয়েক মাস কম। আইনের মারপ্যাচে মুক্তি পান নির্ভয়ার এই ক্ষুদে ধর্ষক।
শনিবার রাতে দিল্লি কমিশন অব উইমেনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ওই কিশোরের মুক্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট আইনি কোনো ভিত্তি না থাকার কারণ দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে ওই ধর্ষককে আর আটকে রাখা যাবে না।
নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডে মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করে দেশটির পুলিশ। এর মধ্যে ওই কিশোরকে আদালত তিন বছরের জন্য এক শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিন বছর সংশোধনাগারে থাকার পর রোববার ছাড়া পায় ওই কিশোর। অন্য পাঁচজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় তিহার কারাগারে। এছাড়া বাকি চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।
এদিকে, নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে কিশোরের জড়িয়ে পড়া এবং আইনের সুযোগ নিয়ে মামলা থেকে বেরিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ভারত সরকার ওই আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে দিল্লিতে চলন্ত বাসে নির্ভয়াকে গণ-ধর্ষণের পর বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই মারা যান নির্ভয়া। গত সপ্তাহে দিল্লির প্যারা মেডিক্যালের এই শিক্ষার্থীর আসল নাম প্রকাশ করেছেন তার মা। তিনি বলেন, আমার মেয়ের নাম নির্ভয়া নয়, জ্যোতি সিং। সে সময় তিনি বলেন, নাম প্রকাশ করাতে লজ্জিত হওয়া উচিত ধর্ষকদের।