বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এমন কোন আর্কাইভ গড়ে তোলেনি যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটের রেকর্ডগুলো পাওয়া যেতে পারে। বাধ্য হয়েই মানব আর্কাইভের ওপর নির্ভর করতে হয়। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও বলতে পারলেন না তাদের সময়কার কেউ ঢাকা লিগের এক মৌসুমে চার শতক করেছে কি না। ভেবেচিন্তে বলে দিলেন না, এই রেকর্ড কেউ করেনি। তাহলে মুশফিকুর রহিমই প্রথম ক্রিকেটার ঢাকা লিগে এক মৌসুমে চারটি শতক পেলেন।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান রোববার লিগে তার চতুর্থ শতকটি করেছেন ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে। খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ১১৮ বলে ১১৪ রানের ইনিংসে ছিলো ১১টি চার ও দুটি ছয়ের মার। জাতীয় দলের অধিনায়ক আগের শতকগুলো করেছিলেন প্রথম লেগে ব্রাদার্স ইউনিয়ন (১০৫ রান ১২৪ বলে), বিমান ক্রিকেটার্স (১০৬ রান ১১৬ বলে) এবং গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্সের (১১৬ রান ১৪১ বলে) বিপক্ষে।
মুশফিকের দল ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ছয় উইকেটে ২৮৭ রানের বড় স্কোর গড়ে। অধিনায়ক ভাল ইনিংস খেললে বাকিরাও উজ্জীবিত হয়। মাহমুদুল হাসান ৬৮ বলে করেছেন ৭৪ রান। আর মেহরাব হোসেন জুনিয়র ব্যক্তিগত ৩৯ রানে এলবিডব্লু হন। ছয় উইকেটের দুটি নিয়েছেন ভিক্টোরিয়ার স্পিনার মোশারফ হোসেন।
ওই রান তাড়া করতে নেমে জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিলো সাকিব আল হাসানের ভিক্টোরিয়া। ওপর থেকে মিডল অর্ডার পর্যন্ত কমবেশি রানের যোগান দেওয়ায় টায়টায় এগিয়ে যায়। সৈকত আলী ৩৯, সৌম্য সরকার ৩৭, জহুরুল ইসলাম ৪৪, কামরান সাজিদ ৫০ ও সাকিব ৩৩ করার পরেও ১০ রান কম থাকে ভিক্টোরিয়ার। তারা ২৭৮ রানে অল-আউট হওয়ায় ৯ রানে জয় পায় শেখ জামাল। ভিক্টোরিয়ার আরাফাত সানি, শামসুর রহমান তিনটি করে এবং পেসার ডলার মাহমুদ দুটি উইকেট নেন। এই হারে ভিক্টোরিয়া ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও শেখ জামাল তার ১০ পয়েন্টের সঙ্গে যোগ করেছে আরও দুই পয়েন্ট।
সুপার লিগের প্রথম ম্যাচটাই হারলো আবাহনী। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গাজী ট্যাঙ্ক ক্রিকেটার্সের ২৩৯ রান তাড়া করতে গিয়ে লিগ চ্যাম্পিয়নরা সবকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে ২৩৪ রানে। ছয় রানের টার্গেট পূরণ করতে না পারার আক্ষেপ থাকল মাহমুদউল্লাহদের। গাজী শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে গেলেও পেছালো আবাহনী।
আফাক রহিম ২৩, অলক কাপালীর ৭৭, পাকিস্তানি উসমাল সালাউদ্দিন ৬৫, মোমিনুল হক অপরাজিত ৩১, নাজমুল হোসেন হার না মানা ২৪ করলে গাজীর স্কোর হয় নয় উইকেটে ২৩৯ রান। জবাব দিতে নেমে আবাহনীর ফরহাদ হোসেন ৫১, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৭৮ ও আবুল হাসান ২৩ রান করেন।
বিকেএসপি মাঠে ওল্ডডিওএইচএসর বিপক্ষে বলতে গেলে চমক দেখিয়েছে মোহামেডান। টেনেটুনে সুপার লিগে উঠা দলটি হারিয়েছে প্রথম রাউন্ড শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা ওল্ডডিওএইচএসকে। আগে ব্যাট করতে নেমে জিয়াউর রহমানের ৫১, সাজিদ আনোয়ারের ৫২আদনা রাজার ৫১ ও মো. আশরাফুলের ৩০ মিলে সাত উইকেটে ২৫৪ করে ওল্ডডিওএইচএস। মোহামেডানের নাঈম ইসলাম, মো. ওয়াহিদ ও নূর হোসেন দুটি করে উইকেট নেন।
২৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইমরুল কায়েস ৪৮, পাকিস্তান যুবদলের অধিনায়ক বাবর আজম ৭২, অধিনায়ক নাঈম হার না মানা ৬৩, রাজিন সালেহ ৩৯ ও গোলাম মাবুদ অপরাজিত ২১ রান করলে সাত বল হাতে রেখে পাঁচ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে মোহামেডান।