রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়ও সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আমাদের অর্জন কম নয়। এতদসত্ত্বেও স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা। এ দিনে আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে- ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
তিনি আরো বলেন, আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি জাতীয় ৪ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ সকল স্তরের জনগণকে, যাঁদের অসামান্য অবদান ও সাহসী ভূমিকা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনকে ত্বরান্বিত করে। আমি স্মরণ করছি শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে যাঁরা স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে এদেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
মহান স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল সুখি ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সে লক্ষ্য অর্জনে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় জীবনে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব ও ক্রীড়া, মহিলা ও শিশু ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের সফল অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, জাহাজ তৈরি শিল্পসহ বেসরকারি খাতে উন্নতি হয়েছে।
গণতন্ত্রের বিকাশ ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ব্যাতীত সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরমতসহিষ্ণুতা, সংযম এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গণতন্ত্র বিকাশের পূর্বশর্ত। জাতীয় জীবনে আমাদের আরো ধৈর্য, সংযম ও সহনশীলতার পাশাপাশি অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। জাতীয় সংসদকে পরিণত করতে হবে সকল আলোচনা ও সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দুতে।
সবশেষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার ঘোষিত ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে একটি তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সুখি-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে সবাই বাস্তব অবদান রাখবেন-এমন প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি।