স্মৃতির সফরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় এসেছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সঙ্গে এসেছেন তার পুত্র এরিক এরশাদ ও ভাই সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের। জন্মস্থান শুধু নয়, এরশাদের শৈশব কেটেছে দিনহাটায়। এখানকার ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি পরিচিত ‘পেয়ারা’ নামে। সেই পেয়ারাকে কাছে পেয়ে খুব খুশি আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা। উঠেছেন পৈতৃক বাড়িতেই। মঙ্গলবার দুপুরের পরে দিনহাটাতে পা দিয়েই তিনি টের পেয়েছেন অনেক কিছু পাল্টে গেছে। তবে জানিয়েছেন, ছিটমহল বিনিময়ে তিনি ভূমিকা রাখতে পেরেছেন। আর তাই সাবেক বাংলাদেশি ছিটমহলের বাসিন্দারা বুধবার তার সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ছিটমহল সমস্যা সমাধানে এরশাদ ধন্যবাদ জানিয়েছেন দুই দেশের সরকারকে। এরশাদ জানিয়েছেন, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যাটার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করতে তিনি রাজি বলে জানিয়েছেন। তিস্তার সমস্যা নিয়ে লেখা গানের সিডি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতাও চেয়েছি। উনি কথা দিয়েছেন সমাধানের একটা উপায় খুঁজে দেখার। অবশ্য গতকাল বুধবার সন্ধ্যাতেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। দিনহাটার মাটিতে ছড়িয়ে রয়েছে এরশাদের শৈশব জীবনের বহু স্মৃতি। তাই এরশাদ জানিয়েছেন, এখানে এলেই পুরনো দিন একেবারে ছেঁকে ধরে। ২০০৯ সালে শেষ বার দিনহাটায় এসেছিলেন তিনি। ৬ বছর পর পুরনো বাড়িতে এসে দৃশ্যতই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। ছোটবেলার বন্ধু পুঁটিমারি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুধীর সাহার সঙ্গে খোশমেজাজে আড্ডায় মাতেন। শৈশবের খেলার সাথী থেকে সহপাঠীদের পরিবারের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেন। ঘরের ছেলের জন্য এদিন তার প্রিয় আড় মাছ, খাসির মাংস, পোলাওয়ের ব্যবস্থা করেন বাড়ির লোকেরা। দেয়া হয় পেয়ারার সরবত। এবারের সফরে ডুয়ার্সও ঘুরে দেখবেন এরশাদ। জানিয়েছেন, বয়স হয়েছে, আর আসতে পারবো কিনা জানি না। তাই ডুয়ার্সটাও ঘুরে দেখে যেতে চাই।