আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রেলমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রেলমন্ত্রীর

রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধে অভিযুক্তদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘এটাকে কি আমরা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুন্যাল বলবো, না ফৌজদারি আদালত?’

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সিতে ‘২৫ মার্চ কালো রাত্রির শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্র্ঘ্য’ অনুষ্ঠানে ‘যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তি চাই’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, ‘এটা (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) দেখলে মনে হয়, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিচার হচ্ছে। অথচ মানবতাবিরোধী অপরাধের আইন আন্তর্জাতিক আইনে সুস্পষ্ট দেওয়া আছে।’

বর্তমান আইনি প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে আইন বিশেষজ্ঞ এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘এ বিচারের জন্য নতুন করে যে দীর্ঘ রুলস করা হয়েছে, তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আইন দিয়ে করতে হবে, নতুন কোনো রুলস দিয়ে নয়।’

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রসিকিউটরদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘প্রসিকিউটরদের বলবো, আইন দিয়েই বিচার করতে হবে।’

তিনি বিচার সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘দক্ষ প্রসিকিউটর নির্বাচন করতে হবে। আরও একটি ট্রাইব্যুনাল সম্প্রতি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আরও দু-চারটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। আরও তৎপরতা ও মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে।’

সুরঞ্জিত বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে যে আইন করা হয়েছিল, তা ছিল খুবই ভালো একটি আইন। সেটি ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘বিচার করলেই হবে না, তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সেজন্য বিশিষ্ট আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার কামাল হোসেন, আমিরুল ইসলামদের এমিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। তাহলে এই বিচারের অপপ্রচার সম্পর্কে জবাব দেওয়া যাবে।’

তিনি কালো রাত্রির কথা স্মরণ করে বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যে অমানবিক ও বর্বর গণহত্যা চলানো হয়েছিল, তা নিষ্ঠুরতায় পৃথিবীর অনেক গণহত্যাকে ম্লান করে দেয়।’

অনুষ্ঠানে আইনপ্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মানবতাবিরোধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। পৃথিবীর বহুদেশে মানবতাবিরোধীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু কোথাও বাধা দেওয়া হয়নি। তবে কেবল বাংলদেশেই একটি গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করছে।’

কামরুল বলেন, ‘বিচার বাংলার মাটিতে হবেই হবে। আমরা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এ বছরের মধ্যেই শেষ করতে চাই।’

জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, এমপি, আমির হোসেন আমু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, উপউপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ রাজনীতি