আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে কিংবা ধর্মের ওপর হস্তক্ষেপ হয় এমন আইন সরকার করবে না। পারিবারিক আইনের সাথে ধর্মীয় অনুভূতিও জড়িত। মানবকল্যাণের জন্য ধর্ম এবং সব ধর্মের উদ্দেশ্য এক। ধর্মীয় অনুভূতির দিকে নজর দিয়ে পারিবারিক আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শনিবার ঢাকার বিয়াম মাল্টিপারপাস হলে আইন কমিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশে পারিবারিক আইনের পর্যালোচনা’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব একথা বলেন।
পারিবারিক আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়ার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
আইনকমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. এম শাহ আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এস কে সিনহা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামিম মোঃ আফজাল ও পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ্ আল মারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাহনাজ হুদা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ্ আল ফারুক, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাংবাদিক শাহজাহান মিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী, অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফাদার এলবার্ট রোজারিও, জাতীয় চার্চ পরিষদের সম্পাদক ডেভিড এ দাস, আইন কমিশনের সচিব হাছিনা রৌশন জাহান, ধর্মীয় নেতা, নারী নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় খৃস্টান, হিন্দু এবং মুসলিম পারিবারিক আইনের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ড. ফস্টিনা পেরেরা, আইন কমিশনের সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা শারমিন নিগার এবং গবেষণা কর্মকর্তা উমে¥ সরাবন তহুরা।
কর্মশালায় বক্তারা পারিবারিক আইনে বিভিন্ন বিষয় সংশোধনের সুপারিশ তুলে ধরেন। বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তিতে পুত্র ও কন্যার উত্তরাধিকার, সম্পত্তিতে দত্তক সন্তানের উত্তরাধিকার, হিন্দু বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ নিবন্ধন, সম্পত্তির বন্টন, মুসলিম আইনে স্ত্রীর ভরণপোষণ ও দেনমোহর ইত্যাদি নানা বিষয়ে কর্মশালায় আলোচনা হয় এবং বক্তরা সুপারিশ তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নাগরিকদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও কল্যাণ বয়ে আনবে এমন আইনই সংবিধানের চাহিদা। আইন নাগরিক কল্যাণের বিরোধী হলে তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হবে।
সকল সম্প্রদায়ের সুচিন্তিত মতামতের ওপর ভিত্তি করে সরকার পারিবারিক আইন পরিবর্তন করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।