সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নাটকীয় জয় পেয়েছে রংপুর রাইডার্স। লো স্কোরিং ম্যাচে মাত্র ১০৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে দারুণ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিববাহিনী। এর আগের দুই ম্যাচ ১ রানে হারার পর এবার ৬ রানের হারে হতাশার আগুনে পোড়ে সিলেট সুপার স্টার্স।
রংপুর রাইডার্সের দেয়া ১১০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় সিলেট সুপার স্টার্স। প্রথম ওভারে জশোয়া কবকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। মাঝে ছোট্ট বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসে ফর্মে থাকা আরেক ওপেনার মুনাবীরাকে পেরেরার ক্যাচ পরিণত করে ফেরান এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এরপর এক প্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করে দলের ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন মুমিনুল হক। তবে ব্যক্তিগত ২৯ রানে পেরেরার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফিরতে হয় এই ব্যাটসম্যানকে। পরের ওভারে নাজমুল ইসলাম অপুকে ফেরান সেনানায়েকে। দলীয় ৫৬ রানে সানি বোপারাকে ফেরালে দারুণভাবে খেলায় ফিরে আসে রংপুর।
এরপর নাসুম আহমেদকে নিয়ে দলের ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তবে দলীয় ৭৩ রানে নাসুমকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন আবু জায়েদ। ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই বোলিং করতে এসে নাজমুল হোসেন মিলনকে ফিরিয়ে আবারো রংপুরকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন সাকিব।
১৮তম ওভারের শেষ বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন নুরুল হোসেন সোহান। পরের ওভারে বল করতে এসে শহীদকে বোল্ড করে জয়ের স্বপ্ন দেখান ড্যারেন স্যামি।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ রানের। শেষ ওভারে বোলিং করার গুরু দায়িত্ব ছিল তরুণ আবু জায়েদের হাতে। সে দায়িত্ব খুব ভালোভাবেই পাড় করেন এই তরুণ। লং অন দিয়ে উড়িয়ে সীমানা পাড় করতে গিয়ে সেনানায়েকের হাতে ধরা পড়েন মেন্ডিস। ফলে ৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুরের দলটি।
রংপুর রাইডার্সের পক্ষে ৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার সাকিব। ৫ রান দিয়ে ২টি উইকেট পান আবু জায়েদ। এছাড়া পেরেরা, সানি এবং সেনানায়েকে ১টি করে উইকেট পান।
এর আগে বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে রংপুর রাইডার্স। শহীদের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য সরকার।
এক ওভার পরেই আরেক ওপেনার লেন্ডন সিমন্স রান আউটে কাটা পড়েন। তিন নাম্বারে খেলতে নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেননি মো. মিঠুনও। নাসুম আহমেদের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন এই ব্যাটসম্যান।
এরপর জহিরুল ইসলাম দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসাবে রান আউট হলে দলের বিপদ আরো বেড়ে যায়। তবে থিসারা পেরেরাকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু পেরেরা দলীয় ৮০ রানে বোপারার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসলে বিপদে চাপে পড়ে যায় রংপুর। ১৬ বলে ২টি ছক্কার সাহায্যে ২১ রান করেন এই লঙ্কান।
সে বিপদ আরো বেড়ে যায় হিট উইকেট হয়ে ড্যারেন স্যামি ফিরে আসলে। এরপর দ্রুতই ফিরে যান সেনানায়েকে। একপ্রান্তে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৩৫ বলে ২টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে এই রান করেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান থিতু হতে না পারলে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর রাইডার্স। সিলেটের হয়ে মো. শহীদ মাত্র ১২ রানে তুলে নেন ৪ উইকেট। এছাড়া নাসুম, বোপারা এবং নাজমুল ১টি করে উইকেট নেন।